শরীরে ট্যাটু আঁকালেই বিনা মূল্যে ট্রেন ভ্রমণ

রেলকার্ডের নাম ক্লিমাটিকিট বা ক্লাইমেট টিকিট
ছবি: গ্রিন পিসের সৌজন্যে

এক বছর ভাড়া ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে সরকার। তা–ও অস্ট্রিয়ার মতো দেশে, যেখানে ট্রেন ভ্রমণ তুলনামূলক ব্যয়বহুল। কারণ, ইউরোপের অন্য দেশের মতো অস্ট্রিয়াতেও গণপরিবহন হিসেবে যাত্রীদের প্রথম পছন্দ ট্রেন। তবে বিনা মূল্যে এ ভ্রমণসুবিধা পেতে মানতে হবে একটি শর্ত।

অস্ট্রিয়ার রেল বিভাগ সম্প্রতি একটি নতুন রেলকার্ড করেছে। ক্লিমাটিকিট অর্থাৎ ক্লাইমেট টিকিট নামে ওই রেলকার্ডের ছবি শরীরে ট্যাটু করলে এক বছর বিনা মূল্যে ট্রেনে ভ্রমণ করার এ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। দেশটিতে ট্রেন ভ্রমণে একজন যাত্রীকে বছরে গড়ে এক হাজার ইউরো ভাড়া গুনতে হয়।

সরকার গৃহীত বিশেষ এই উদ্যোগের ঘোষণা এসেছে অস্ট্রিয়ার জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী লিওনর গিওয়েসলারের পক্ষ থেকে। গত সপ্তাহের শেষে এক সংগীত উৎসবে তিনি এ ঘোষণা দেন। মন্ত্রী তাঁর বাহুতেও এমন একটি ট্যাটু আঁকিয়েছেন। সেই ট্যাটুর ছবি প্রকাশও করেছেন তিনি।

এ জন্য উৎসব প্রাঙ্গণে একটি তাঁবুও পাতা হয়েছিল। সেখান থেকেই প্রথম ট্যাটু করা শুরু হয়। বলা হয়, ক্লিমাটিকিট শব্দটি নিজের বাহুতে ট্যাটু করে প্রথম তিনজন বিনা মূল্যে রেলকার্ড পাওয়ার অধিকারী হতে পারেন। এরপর বিনা মূল্যে এক বছরের রেলকার্ড পেতে অনেকে ট্যাটু করিয়েছেন।

অস্ট্রিয়ার জার্মান ভাষার সংবাদপত্র জায়েশপোগা নাহেশমুর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উৎসব প্রাঙ্গণেই ছয়জন বাহুতে ট্যাটু করান।এরপর গত মাসে আরও অন্তত ৩০ জন রেলকার্ডের ট্যাটু করিয়েছেন।

ট্যাটু করার বিনিময়ে বিনা মূল্যে ট্রেনে ভ্রমণসুবিধা দেওয়ার এ উদ্যোগ নিয়ে অবশ্য সমালোচনাও হচ্ছে। হেনরিক বান্ডস্ট নামের দেশটির একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন, জনগণের টাকা খরচ করে এভাবে তাঁদের শরীরে ট্যাটু করে বিজ্ঞাপন দেওয়ার এই ঘটনা অগ্রহণযোগ্য এবং খুবই অমানবিক।

ফল্টার নামের দেশটির একটি সাপ্তাহিক সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ফ্লোরিয়ান ক্লেনকও এর সমালোচনা করেছেন। তিনি সরকারের এ প্রচারণাকে উপহাস ও বিদ্বেষপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।

তবে মন্ত্রী গিওয়েসলার বলছেন, কার্বন নিঃসরণ কীভাবে কমানো যায় সেই চিন্তা থেকেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেন জনগণ ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহন ব্যবহারে উৎসাহী হয়।

স্থানীয় এক টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, ‘এতে আগ্রহী ব্যক্তিদের বেশির ভাগের শরীরে ইতিমধ্যে ট্যাটু আছে। তা ছাড়া এই ট্যাটু করানো হচ্ছে সব রকম সতকর্তামূলক পদক্ষেপ মেনেই। আর শুধু প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ যাঁদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারাই এ ট্যাটু করতে পারবেন।’