ব্রিটিশ দুই স্বেচ্ছাসেবকের মরদেহ ফিরিয়ে দিল রাশিয়া

ব্রিটিশ দুই স্বেচ্ছাসেবক অ্যান্ড্রু বাগশো ও ক্রিস প্যারি।
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ দুই স্বেচ্ছাসেবকের মরদেহ উদ্ধার করে ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দিয়েছে রাশিয়া।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় ওই দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক নিহত হয়েছিলেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ বলেছেন, ওই দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক হলেন ক্রিস প্যারি (২৮) ও অ্যান্ড্রু বাগশো (৪৭)। দুজনের মরদেহ ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মীদের কাছে কবে হস্তান্তর করা হবে সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।

নিহত ক্রিস প্যারি ও অ্যান্ড্রু বাগশোর পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, মানবিক উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার সময় তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

গত ৬ জানুয়ারি শেষবারের মতো এই দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবককে সোলেদার শহরে যেতে দেখা গেছে। অ্যান্ড্রু বাগশোর পরিবার বলছে, এক বৃদ্ধাকে সহায়তা করার সময় তাঁদের গাড়িতে শেল হামলা হয়।

আরও পড়ুন

পূর্ব ইউক্রেনের লবণখনির শহর হিসেবে পরিচিত সোলেদারের দখল নিয়ে রাশিয়া আর ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে তুমুল লড়াই চলেছে। গত মাসে পুরো শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে রাশিয়া। এ ঘটনার দুই দিন আগে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বাহিনী ওয়াগনার সোলেদার শহর দখলের দাবি করেছিল। তবে কিয়েভের সরকার রাশিয়ার এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই দেশটির চিফ অব স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক বলেছেন, গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত ১১৬ ইউক্রেনীয় সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

চিফ অব স্টাফ বলেন, মুক্তি পাওয়া বন্দীদের মধ্যে মারিওপোল, খেরসন ও বাখমুত শহরের সেনারা রয়েছেন। একই সঙ্গে বিশেষ অভিযানের দুজন কর্মকর্তাও এর অন্তর্ভুক্ত আছে।

ব্রিটিশ দুই স্বেচ্ছাসেবক ক্রিস প্যারি।
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ‘জটিল মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার অংশ’ হিসেবে ৬৩ জন সেনাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এই মন্ত্রণালয় বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতার কারণেই ‘সংবেদনশীল বিভাগের’লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

চলতি বছর এটা দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বন্দী বিনিময়। ইউক্রেনের চিফ অব স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক বলেন, ইউক্রেন সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ক্রিস প্যারি ও অ্যান্ড্রু বাগশো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন।

গত মাসে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্যারির পরিবার বলেছে, ইউক্রেনের বৃদ্ধ, তরুণ ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য তাঁর নিঃস্বার্থ ত্যাগ তাঁদের ‘অত্যন্ত গর্বিত’ করেছে।

তাঁরা বলেছেন, ‘ক্রিসকে বিদায় জানাতে হবে, তা আমরা কখনোই কল্পনা করিনি। তাঁর সামনে একটি পূর্ণ জীবন ছিল। তিনি একজন যত্নবান ছেলে, চমৎকার ভাই, অনেকের সেরা বন্ধু এবং ওলগার প্রেমিক ছিলেন।’

আরও পড়ুন

অ্যান্ড্রু বাগশো একজন গবেষক। ব্রিটিশ নাগরিক হলেও তিনি নিউজিল্যান্ডে থাকতেন। গত এপ্রিল থেকে তিনি ইউক্রেনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন।

গত মাসে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘অ্যান্ড্রু নিঃস্বার্থভাবে অনেক ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং অনেকের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। আমরা তাঁকে ভালোবাসি। তিনি যা করেছেন, তাঁর জন্য সত্যিই আমরা গর্বিত।’