আবার আকাশে উড়বে বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ

রুশ হামলায় ধ্বংস হওয়া বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ
ছবি : রয়টার্স

বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ ‘ম্রিয়া’ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কিয়েভের কাছে হস্তোমিল বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় রুশ বিমানবাহিনী। এতে ইউক্রেনের প্রতিষ্ঠান আন্তোনভের তৈরি এএন-২২৫ মডেলের উড়োজাহাজটি ধ্বংস হয়ে যায়। খবর সিএনএন–এর।

উড়োজাহাজটি যখন ধ্বংস করা হয়, তখন এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টুইট করে বলেছিল, ‘আমাদের স্বপ্ন কখনো মারা যাবে না।’ এখন সেই প্রতিষ্ঠান আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তারা বলেছে, ইতিমধ্যে উড়োজাহাজটির পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

উড়োজাহাজটিকে ইউক্রেনের ভাষায় ডাকা হতো ‘ম্রিয়া’ নামে। এর অর্থ স্বপ্ন। আন্তোনভ এএন-২২৫ উড়োজাহাজটি আশির দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলে নকশা ও নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল মহাকাশযান বহন করা। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উড়োজাহাজটি এ কাজে ব্যবহার করা হয়নি। তবে বিশালাকার এই উড়োজাহাজ বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ হিসেবে এ খাতের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজের চেয়ে ম্রিয়াতে ধারণক্ষমতা ছিল দ্বিগুণ। পাখা বিস্তার করলে এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াত ৮৪ মিটার। এখন পর্যন্ত তৈরি হওয়া সবচেয়ে ভারী উড়োজাহাজ ছিল এটি।

এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ম্রিয়া উড়োজাহাজটি ধ্বংস করার ঘোষণা আসে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা টুইট করে বলেন, ‘এটা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ এএন-২২৫ ম্রিয়া। রাশিয়া হয়তো আমাদের স্বপ্ন ধ্বংস করেছে। তবে একটি শক্তিশালী, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ইউরোপীয় রাষ্ট্র নিয়ে আমাদের স্বপ্নকে তারা কখনো ধ্বংস করতে পারবে না।’

ওই সময় আন্তোনভ কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, রুশ হামলার পর উড়োজাহাজের অবস্থা তারা যাচাই করে দেখতে পারেনি। তবে সিএনএন জানায়, ওই উড়োজাহাজটির সামনের অংশে গোলার আঘাত লেগেছিল। গত এপ্রিলে দেখা যায়, এটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এর পাখা ও ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেছে।

গত সোমবার আন্তোনভ কোম্পানি এক টুইটে জানায়, পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নকশার কাজ চলছে। এটি পুনর্নির্মাণ করতে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হবে। তাদের কাজে বিজয় অর্জনের পর এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ম্রিয়াকে নতুন করে তৈরি করতে যে যন্ত্রাংশ দরকার, তার ৩০ শতাংশ তাদের কাছে রয়েছে।

আন্তোনভ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউক্রেরোবরনমপ্রম। তারা রাশিয়ার কাছ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। তারা বলেছে, উড়োজাহাজ তৈরিতে পাঁচ বছর সময় লাগবে।

আরও পড়ুন