লন্ডনে দুই বছরে ৬০০ শিশুর দেহ তল্লাশি, বেশির ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ

লন্ডনের মেয়র সাদিক খান চাইল্ড কিউ কেস এবং সাম্প্রতিক অন্যান্য ঘটনা নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের সমালোচনা করেছেন
ছবি: এএফপি

লন্ডন পুলিশ দুই বছরের ব্যবধানে ৬০০টির বেশি শিশুর দেহ তল্লাশি করেছে, যাদের বেশির ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ ছেলেশিশু। আজ সোমবার প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

ইংল্যান্ডে শিশুদের নিয়ে কাজ করা কমিশনার র‌্যাচেল ডি সুজা বলেছেন, মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে এই পরিসংখ্যান পাওয়ার পর তিনি ‘বেশ হতবাক’ হয়েছেন। ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় পুলিশ বাহিনীকে গত মার্চে ‘চাইল্ড কিউ’-এর মামলার জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছিল। তখন চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চরম অসদাচরণের জন্য তদন্ত শুরু হয়।

২০২০ সালে ১৫ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে গাঁজা বহন করছে এমন অভিযোগে তল্লাশি করেন নারী পুলিশ কর্মকর্তা। ওই ছাত্রীর তখন মাসিক চলছিল বলে পুলিশ সদস্যদের অবহিত করা হলেও তাঁরা তল্লাশি বন্ধ করেননি। পরে দেখা গেল তাকে ভুলভাবে সন্দেহ করা হয়েছিল।

ডি সুজা জানান, ওই স্কুলছাত্রীকে ‘উপযুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক’র উপস্থিতি ছাড়াই তল্লাশি করা হয়েছিল। এমন ঘটনায় ২৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল না।

ডি সুজা আরও জানান, ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৬৫০ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ককে পুলিশ কর্মকর্তারা তল্লাশি করেছেন। যাদের ৯৫ শতাংশের বেশি ছেলেশিশু ছিল। ৬৫০টি শিশুর মধ্যে ৫৮ শতাংশ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ। এই সংখ্যা বছরের পর বছর ব্যাপক হারে বেড়েছে। ডি সুজা আরও বলেন, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু প্রতিবছর এই অনুপ্রবেশকারী এবং আঘাতমূলক অনুশীলনের শিকার হচ্ছে।

ডি সুজা বলেন, তিনি জাতিগত ভারসাম্যহীনতায় ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। মেট্রোপলিটন পুলিশের মধ্যে ‘শিশু সুরক্ষার আশপাশে পদ্ধতিগত সমস্যার’ বড় অংশ হতে পারে চাইল্ড কিউ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় লন্ডন পুলিশ কর্মকর্তাদের কয়েকটি ঘটনা বেশ সমালোচনা তৈরি করে। গত বছর সারাহ এভারার্ডকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে কূটনৈতিক সুরক্ষা স্কোয়াডের এক সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হওয়ায় ক্রেসিডা ডিক গত ফেব্রুয়ারিতে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

ডি সুজার অনুসন্ধানের প্রতিক্রিয়ায়, লন্ডন পুলিশ বলছে, তারা ইতিমধ্যে ‘অনুপ্রবেশকারী অনুসন্ধানের বিষয়ে শিশুদের সঙ্গে যথাযথভাবে এবং সম্মানের সঙ্গে আচরণ করা নিশ্চিত করতে’ পরিবর্তন শুরু করেছে। তারা স্বীকার করেছে, কিছু শিশু নিজেরাই গ্যাংস্টার এবং মাদক অপরাধীদের দ্বারা ‘শোষণের ঝুঁকিপূর্ণ শিকার’ হতে পারে।

লন্ডনের মেয়র সাদিক খান চাইল্ড কিউ কেস এবং অন্যান্য ঘটনা নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের সমালোচনা করেছেন। সাদিক খানের এক মুখপাত্র বলেন, এটি ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ যে একজন প্রাপ্তবয়স্কের উপস্থিতি ছাড়াই এতগুলো শিশুর দেহ তল্লাশি চলেছে।