যে কারণে পদত্যাগ করলেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা

নিজের এই অল্প সময়ের দায়িত্ব পালনকালে গভীর বিভক্তি ছড়িয়েছেন সুয়েলা ব্রেভারম্যান
ছবি: রয়টার্স

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আর মূল্যস্ফীতিতে টালমাটাল অর্থনীতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাজ্যের সরকার। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানের পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ওপর চাপ আরও বেড়েছে। অবশ্য সুয়েলার জায়গায় গ্রান্ট শ্যাপসকে নিয়োগ দিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সহকর্মীকে ব্যক্তিগত ই–মেইল অ্যাকাউন্ট থেকে দাপ্তরিক নথি পাঠানোর পর বিতর্ক সৃষ্টি হলে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সুয়েলা। ওই ঘটনাকে তিনি ‘প্রযুক্তিগত বিধি লঙ্ঘন’ বলছেন।
সুয়েলার জায়গায় সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা পদত্যাগপত্রে সুয়েলা বলেন, ট্রাসের সরকার যে পথে এগোচ্ছে, তা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। সরকারকে ‘বিশৃঙ্খল সময়’ সামাল দিতে হচ্ছে।
এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে দুজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী সরকার ছাড়লেন। কোণঠাসা হয়ে পড়া ট্রাসের ওপর আরও চাপ বাড়িয়েছে সুয়েলার পদত্যাগ। কেবল ছয় সপ্তাহ হয়েছে ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এরই মধ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে তাঁকে লড়তে হচ্ছে।

সুয়েলা বলেন, ‘আমি ভুল করেছি। আমি দায় নিচ্ছি, পদত্যাগ করছি।’ সদ্য পদত্যাগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্লামেন্টের একজন সহকর্মীকে ব্যক্তিগত ই–মেইল অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি দাপ্তরিক নথি পাঠিয়েছেন। এটা ‘প্রযুক্তিগত বিধি লঙ্ঘন’। এ জন্য ‘আমার সরে দাঁড়ানোটা সঠিক’ হবে।

আরও পড়ুন

জবাবে সুয়েলাকে লেখা চিঠিতে ট্রাস বলেছেন, মন্ত্রিসভার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানানো গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র আমি গ্রহণ করেছি। আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার প্রতি সম্মান জানাই। সরকারি আচরণবিধি সমুন্নত রাখা গুরুত্বপূর্ণ এবং মন্ত্রিসভার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে হবে।’

গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ট্রাস। প্রাথমিকভাবে তিনি কনজারভেটিভ পার্টির উদারপন্থী অংশ থেকে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের নিয়োগ দিয়ে সরকার গঠন করেন।

তবে অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ওঠা বিতর্ক সামলাতে অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারতেংকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হন ট্রাস। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে জেরেমি হান্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইয়ে হান্ট নিজেও লড়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাসের প্রতিদ্বন্দ্বী ঋষি সুনাককে সমর্থন দিয়েছিলেন তিনি।

অন্যদিকে নেতৃত্বের এই লড়াইয়ে ছিলেন সুয়েলাও। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে ট্রাসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।

নিজের এই অল্প সময়ের দায়িত্ব পালনকালে গভীর বিভক্তি ছড়িয়েছেন সুয়েলা। চলতি মাসের শুরুর দিকে দলের বার্ষিক এক সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে রুয়ান্ডার উদ্দেশে যুক্তরাজ্য ছেড়ে যাওয়া একটি ফ্লাইট দেখতে পারাটা তাঁর ‘স্বপ্ন’।