খেরসনেও কয়েকটি এলাকা ইউক্রেনীয় বাহিনীর পুনর্দখল, স্বীকার রাশিয়া–সমর্থিত কর্মকর্তার

খেরসনে রুশ সেনাদের একটি সাঁজোয়া যান
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে নিপ্রো নদীর পশ্চিম তীরের গ্রামগুলো সোমবার ইউক্রেনীয় বাহিনী দখলমুক্ত করেছে। ওই সব এলাকা থেকে রুশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। ইউক্রেনের খেরসন প্রদেশে রাশিয়া–সমর্থিত প্রশাসনিক প্রধানের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

খেরসনকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় এমন খবর প্রকাশ পেল।

খেরসন প্রদেশে রাশিয়া সমর্থিত প্রশাসনিক প্রধান ভ্লাদিমির সালদো রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী দিনিপ্রো নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা দখলমুক্ত করেছে। তারা দুদচানি গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এর মানে হলো, ইউক্রেনীয় বাহিনী এক দিনে প্রায় ৪০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে।

ইউক্রেনীয় বাহিনী নীরব

ইউক্রেনীয় বাহিনী এখন পর্যন্ত কতটুকু অগ্রসর হয়েছে, সে ব্যাপারে তারা কিছু নিশ্চিত করেনি। ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে কিয়েভ পুরোপুরি নীরব ভূমিকা পালন করছে। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী নিয়ে ব্লগ লেখেন এমন মানুষেরা বলছেন, তারা একটি ইউক্রেনীয় ট্যাংককে ওই নদীর তীরবর্তী বেশ কয়েক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত অগ্রসর হতে দেখেছে।

সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খুব একটা বক্তব্য পাওয়া না গেলেও আনতোন গেরাশশেনকো নামের ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি একজন ইউক্রেনীয় সেনা। জোলোতা বালকা এলাকায় ওই সেনা পতাকা ওড়াচ্ছেন।

রাশিয়ার সেনাবাহিনী–সংক্রান্ত ব্লগারদের বরাতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক রব লি বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা পিছু হটছেন। ইউক্রেনীয় সেনাদের বাধার মুখে আগের দিনের চেয়ে ৪০ কিলোমিটার পিছু হটেছেন তাঁরা।

এক টুইটার পোস্টে রব লি লিখেছেন, ‘সব রুশ মাধ্যম যখন সতর্কবার্তা দিচ্ছে, তখন বোঝা যায়, তারা সমস্যার মধ্যে আছে।’

দিনিপ্রো নদীর তীরবর্তী এলাকায় ইউক্রেনীয় সেনাদের অগ্রসর হওয়ার কারণে নদীর অপর পাশে থাকা হাজারো রুশ সেনা আটকে পড়তে পারেন। সব ধরনের সরবরাহ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন তাঁরা। নদীটি ব্যাপকভাবে প্রশস্ত। ইউক্রেনীয় বাহিনী ইতিমধ্যে নদী পারাপারের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরু হওয়ার পর এই প্রথম ইউক্রেনীয় বাহিনী দক্ষিণাঞ্চলের দিকে এতটা দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ইউক্রেনীয় বাহিনীর কাছে রাশিয়া দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লিমানের নিয়ন্ত্রণ হারানোর এক দিন পরই খবরটি সামনে এল। শনিবার শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয় ইউক্রেনের বাহিনী।

এর আগের দিন শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝঝিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের প্রায় ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা রুশ ফেডারেশনে যুক্ত করতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

তবে পুতিনের ঘোষণার দিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে তাঁরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন