মঞ্চনাটক, পথনাটক বা যোগব্যায়াম না দেখা কোনো মানুষের পক্ষে এমন ভাবনা চলে আসাটা অস্বাভাবিক নয়। প্রায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে কয়েকটি নিথর দেহ পড়ে আছে। আর আলখাল্লা পরা একজন মানুষ সেখানে কী যেন করছেন! এমন পরিস্থিতি দেখে চট করে একজন পুলিশে ফোন করলেন। সঙ্গে সঙ্গে কয়েক গাড়ি পুলিশও সেখানে হাজির।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে যুক্তরাজ্যের লিংকনশায়ারে চ্যাপেলের সেন্ট রিওনার্ডসে নর্থ সি অবজারভেটরি এলাকায়। শেষমেশ জানা গেলে, সেখানে হত্যার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। সেটি ছিল নিছক যোগব্যায়ামের অনুশীলনমাত্র।
যোগব্যায়ামের ওই শিক্ষক ২২ বছর বয়সী মিলি লজ। তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি সমুদ্র অভিলাষ কেন্দ্র নর্থ সি অবজারভেটরির সিস্কেপ ক্যাফেতে ক্লাস নিচ্ছিলেন। সাত শিক্ষার্থীকে তিনি যোগব্যায়ামের অন্যতম ধাপ শবাসন শেখাচ্ছিলেন। শবাসন করতে শিক্ষার্থীরা গায়ের ওপর কম্বল দিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে মেঝেতে শুয়ে ছিল। আর তিনি আলখাল্লা পরে যজ্ঞের মতো করে শুয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চারদিক ঘুরে ঘুরে ড্রাম বাজাচ্ছিলেন। এ সময় আলো-আঁধারের আবেশ আনতে কক্ষের বৈদ্যুতিক বাতিগুলো বন্ধ রাখা হয়। এর পরিবর্তে ছোট ছোট মোমবাতি ও টি-লাইট জ্বালিয়ে মৃদু আলোর ব্যবস্থা করা হয়।
পরে জানা গেছে, এক দম্পতি কুকুর নিয়ে ওই ক্যাফের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা কাচের জানালা দিয়ে ‘ভুতুড়ে’ ওই অবস্থা দেখে ভাবেন, এখানে কোনো তান্ত্রিক কয়েক ব্যক্তিকে হত্যা করে তন্ত্রমন্ত্র পাঠ করছেন। তাঁদের একজন সময় ক্ষেপণ না করে পুলিশে ফোন করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক পাঁচটি গাড়ি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়।
এ নিয়ে পরে সিস্কেপ ক্যাফে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বুধবার রাত নয়টার দিকে পুলিশ আসার ওই ঘটনা ঘটে। নর্থ সি অবজারভেটরিতে সন্ধ্যায় নিয়মিত এমন কয়েকটি যোগব্যায়ামের আয়োজন করা হয়। তবে পুরো বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ক্যাফের ব্যবস্থাপক। তিনি তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ায় পুলিশকে ধন্যবাদও জানান।
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ফোন করে তথ্যদাতা ব্যক্তির উদ্দেশ্য ছিল সৎ। তারা রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে ওই ফোনকল পায়।