তুরস্কে মৃত্যুর সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে: ডব্লিউএইচও

তুরস্কের কাহরামানমারাস এলাকায় ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের ভেতরে থেকে নিহত ও জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে উদ্ধারকারীরা
ছবি: এএফপি

সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত মানুষের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

গতকাল সোমবার ভোরে প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানার পর থেকে বর্তমানে চার হাজার বেশি মানুষ এতে নিহত হয়েছেন।

প্রথম আঘাত হানার পর দ্বিতীয় শক্তিশালী কম্পন আরও উত্তরে আঘাত হানে। এখন চলছে উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকারীরা প্রচণ্ড শীত ও তুষারপাতের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের পাহাড়ের মধ্য থেকে জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

তুরস্কের এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের নানা দেশ। বিশেষজ্ঞ দল ও নানা সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তার চেষ্টা করছে নানা দেশ।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার কম্পনটি আঘাত হানে।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রথম ভূমিকম্পটি তুরস্কে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটি। ভূমিকম্পে জীবিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কম্পন বন্ধ হতে দুই মিনিট সময় লেগেছে।

দ্বিতীয় ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫। এর কেন্দ্রস্থল ছিল কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান জেলায়।

ভূমিকম্পের আশপাশের এলাকায় পরাঘাত বা আফটার শক অনুভূত হয়েছে। কাল সারা দিন ধরে তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশের মৃত ও আহতের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছে যে এই সংখ্যা আট গুণের মতো বাড়তে পারে। কারণ, উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রচুর মানুষকে খুঁজে পাচ্ছে।

ডব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা সব সময় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে একই জিনিস দেখতে পাই। দুর্ভাগ্যবশত শুরুর দিকে হতাহতের সংখ্যা যা থাকে, পরবর্তী সপ্তাহে বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে তা বেড়ে যায়।’

স্মলউড বলেন, তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডার মধ্যে অনেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।

নিহত মানুষের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর সিরিয়ার বাসিন্দা। এসব এলাকায় লাখ লাখ শরণার্থী তুরস্কের সীমান্তের দুই পাশে শিবিরে বসবাস করছেন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কয়েক শ প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

তুরস্ক ও সিরিয়া—দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে বিভিন্ন ভবন ধ্বংসের চিত্র দেখা যায়। কোনো কোনো ১২তলা উচ্চতার ভবন এখন মাটিতে মিশে গেছে। রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং যত দূর চোখ দেখা যায়, সেখানে ধ্বংসস্তূপের বিশাল পাহাড়।