মিস সুইজারল্যান্ড ফাইনালিস্টকে হত্যার পর মরদেহ টুকরা করেন স্বামী
সুইজারল্যান্ডের সাবেক মিস সুইজারল্যান্ড ফাইনালিস্টকে (চূড়ান্ত পর্বে নির্বাচিত) হত্যা করে মরদেহ কেটে টুকরা টুকরা করা হয়েছিল। শুধু তা–ই নয়, মরদেহের কিছু কিছু অংশ ব্লেন্ডারে পিষে ফেলা হয়েছিল। অভিযোগ, এভাবে তাঁকে হত্যা করেছেন তাঁরই স্বামী। তদন্ত শেষে গতকাল বুধবার থমাস নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের বেসেল-ল্যান্ডশাফট অঞ্চলের সরকারি প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানায়, নিহত নারীর নাম ক্রিস্টিনা জোকসিমোভিচ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৮ বছর বয়সী এ নারীকে বেসেল শহরের কাছে বিনিংগেনে নিজের বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে গতকাল জোকসিমোভিচের স্বামী ৪৩ বছর বয়সী থমাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। থমাস শ্বাস রোধ করে জোকসিমোভিচকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সংবাদমাধ্যমের গোপনীয়তার নীতির কারণে থমাসের পুরো নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও আদালতের নথি অনুসারে, মেশিনচালিত করাত, ছুরি এবং বাগান পরিচর্যার কাঁচি দিয়ে জোকসিমোভিচের শরীর কেটে টুকরা টুকরা করা হয়েছিল। তবে শুধু গর্ভাশয় আলাদা করে সরানো হয়েছিল। কিছু অংশ বড় ব্লেন্ডারে পিষে রাসায়নিক দ্রবণে গলানো হয়েছিল। এসব কাজ করার সময় মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ভিডিও দেখছিলেন থমাস।
জোকসিমোভিচকে হত্যার বিষয়টি প্রথম নজরে আসে তাঁর বাবার। জামাকাপড় ধোয়ার ঘরে (লন্ড্রি রুম) কালো ব্যাগ থেকে বেরিয়ে আসা সোনালি চুল দেখে তিনি ভয়ংকর কিছুর আশঙ্কা করেন। তদন্ত চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে ব্লেন্ডার, দেহের কিছু অংশ, চামড়ার টুকরা ও হাড়ের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থমাস স্ত্রীকে হত্যা করতে নিতম্ব থেকে হাড়, বাঁ বাহু, কনুই থেকে কবজির অংশ এবং ডান পায়ের নিচের অংশ কেটে ফেলেছিলেন। শেষে মাথা কেটে মেরুদণ্ড ছিন্ন করে ফেলেছিলেন।
থমাস দাবি করেন, স্ত্রী তাঁকে আগে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিলেন। পরে তিনি আত্মরক্ষার্থে তাঁকে আক্রমণ করেন। তবে চিকিৎসকেরা থমাসের আত্মরক্ষার কোনো প্রমাণ পাননি। তাঁরা জানিয়েছেন, জোকসিমোভিচের মৃত্যু হয়েছে শ্বাস রোধের কারণে।
স্থানীয় পুলিশ নথিতে উল্লেখ করেছে, থমাসের আচরণে অত্যন্ত উচ্চ স্তরের অপরাধপ্রবণতা, সহানুভূতির অভাব এবং ঠান্ডা মাথায় ভয়ংকর কাজ করার প্রবণতা স্পষ্ট।
জোকসিমোভিচ ২০০৭ সালে মিস সুইজারল্যান্ড ফাইনালিস্ট ছিলেন। পরে তিনি ক্যাটওয়াক কোচিং ব্যবসা পরিচালনা করতেন। ২০১৩ সালে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগী ডমিনিক রিন্ডারখেচটকের পরামর্শক ছিলেন।