স্তালিনগ্রাদের লড়াই কি হিটলারের পতন ডেকে এনেছিল

১৯৪৫ সালের ৭ মে হিটলারের নাৎসি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে ব্যর্থতার পর মূলত কোণঠাসা হয়ে পড়ে তাঁর বাহিনী। এর আগে ৩০ এপ্রিল তিনি আত্মহত্যা করলে নাৎসি বাহিনীর সামনে আত্মসর্মপণ ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। সেই ঘটনা নিয়ে আজকের আয়োজন।

১৯৩৯ সালে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে অ্যাডলফ হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিলেনফাইল ছবি: রয়টার্স

অ্যাডলফ হিটলার। জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর। নাৎসিবাদী রাজনীতি করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী আকাঙ্ক্ষা মেটাতে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে আক্রমণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে দেন। পাঁচ বছর ধরে চলে সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে সপরিবারে আত্মহত্যা করেন হিটলার। এতে তাঁর নাৎসি বাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়। দিনটি ছিল ১৯৪৫ সালের ৭ মে। ইতিহাসের এই দিনে হিটলারের নাৎসি বাহিনী আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

হিটলারের উত্থান

অ্যাডলফ হিটলার ১৮৮৯ সালে অস্ট্রিয়ার ব্রাউনাউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। চিত্রশিল্পী হওয়ার জন্য ভিয়েনার আর্ট কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দুবার আবেদন করেও ব্যর্থ হন। মাঝখানে কয়েকটি বছর কেটে যায়।

এরপর ১৯১৩ সালে জার্মানির মিউনিখে চলে যান হিটলার। পরের বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জার্মান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কৃতিত্বের জন্য একাধিক পদকও পান।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ‘জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ আলোচনায় আসে। দলটির ওপর নজরদারি করতে হিটলারকে মিউনিখে পাঠানো হয়। হিটলার দলটির কিছু সভায় অংশ নেন। তাদের অনেক চিন্তাভাবনার সঙ্গে একমত হন। ১৯১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি সেই দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

নাৎসি পার্টির ইতিহাস

১৯২০ সালে দলটির নাম পরিবর্তন করে ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি’ করা হয়, যা পরে নাৎসি পার্টি নামে পরিচিতি পায়। ১৯২১ সালে নাৎসি পার্টির নেতৃত্বে আসেন হিটলার।

১৯২৩ সাল নাগাদ নাৎসি পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। মাঝখানে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৩২ সালনাগাদ জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় নাৎসি পার্টি।

১৯২৩ সাল নাগাদ নাৎসি পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। মাঝখানে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৩২ সাল নাগাদ জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয় নাৎসি পার্টি।

হিটলারকে চ্যান্সেলরের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট পল ফন হিন্ডেনবার্গ। ১৯৩৩ সালের ৩০ জানুয়ারি চ্যান্সেলর হন হিটলার।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

চ্যান্সেলর হয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস করিয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন হিটলার। ১৯৩৪ সালের আগস্টে হিন্ডেনবার্গ মারা যান। এরপর চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব একাই পালন করতে শুরু করেন হিটলার। নিজেকে জার্মানির ‘ফুয়েরার বা সর্বোচ্চ নেতা’ ঘোষণা করেন।

অ্যাডলফ হিটলার ও ইভা ব্রাউন
ফাইল ছবি: এপি

এভাবে চ্যান্সেলর থেকে একনায়ক হয়ে ওঠেন হিটলার। নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিশ্চিত হওয়ার পর হিটলার একের পর পদক্ষেপ নিতে থাকেন।

১৯৩৯ সালের ২৩ আগস্ট। হিটলারের জার্মানি এবং জোসেফ স্তালিনের সোভিয়েত ইউনিয়নের (বতর্মান রাশিয়া) মধ্যে একটি চুক্তি হয়। পুরোপুরি বিপরীত আদর্শের নাৎসি ও সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে চুক্তিতে ইউরোপের অন্যান্য দেশ বিস্মিত হয়েছিল।

চ্যান্সেলর হয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস করিয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন হিটলার। ১৯৩৪ সালের আগস্টে হিন্ডেনবার্গ মারা যান। এরপর চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব একাই পালন করতে শুরু করেন হিটলার।

চুক্তির মূল বিষয় ছিল একে অপরকে আক্রমণ না করা। প্রকৃতপক্ষে সে চুক্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিত রচিত হয়েছিল। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর হিটলারের জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে বসে। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়। পরে এর সঙ্গে যুক্ত হয় ইতালি, জাপান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৪০ সালের মে মাসে হিটলার ফ্রান্স আক্রমণ করেন। মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফ্রান্স দখল করে নেয় হিটলারের জার্মানি।

ব্রিটেন দখলের চেষ্টা

ফ্রান্স দখলের পর ব্রিটেন আক্রমণের ছক কষতে থাকেন হিটলার। ব্রিটেন আক্রমণের সেই রণকৌশলের নাম ছিল অপারেশন সি লায়ন। যার উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ প্রতিরোধ ভেঙে ফেলা।

এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল ফ্রিৎজ হালদার। শুরুতে হিটলার ১৯৪০ সালের ১৬ আগস্ট ব্রিটেন আক্রমণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবসম্মত নয় বলে পরে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়।

এই অভিযানের মাধ্যমে ব্রিটেনের দক্ষিণ উপকূলে জার্মান সেনাবাহিনী অবতরণ করে দেশটি দখলের পরিকল্পনা ছিলো হিটলারের। লুফথওয়াফ (জার্মান বিমানবাহিনী) আশা করেছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে তারা ব্রিটিশ রয়েল ফোর্সকে ধ্বংস করতে পারবে।

তবে জার্মানির তত্কালীন নৌবাহিনী প্রধান এরিক রেডার বিস্তৃত উপকূলজুড়ে আক্রমণের বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করতেন, ব্রিটেনের রয়্যাল নেভির সঙ্গে তারা পেরে উঠবেন না।

তা ছাড়া হামলা চালানোর মতো নাৎসি বাহিনীর কাছে প্রয়োজনীয় জাহাজ ছিল না। একই সঙ্গে রয়্যাল নেভির হুমকি মোকাবিলায় জার্মান নৌবাহিনীর সক্ষমতা ছিল অপর্যাপ্ত।

জার্মান বিমান বাহিনীর প্রধান হারম্যান গোরিং ১৯৪০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ব্যাপক বিমান হামলা চালান ইংল্যান্ডে। যার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ ফাইটার কমান্ডকে ধ্বংস করা। কিন্তু এতে লুফথওয়াফে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লুফথওয়াফে ছিল নাৎসি-জার্মানির বিমান বাহিনী। অবশেষে ১৭ সেপ্টেম্বর হিটলার অপারেশন সি লায়ন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন।

এরপর হিটলার তার মনোযোগ পূর্বদিকে ঘুরিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে আক্রমণের (অপারেশন বারবারোসা) পরিকল্পনায় মনোনিবেশ করেন। সি লায়নের পরিকল্পনা আর কখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

১৯৩৯ সালে পোল্যান্ডে হিটলারের সঙ্গে রোমেল (বাঁয়ে)
ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

অপারেশন বারবারোসা

বার্লিনভিত্তিক গবেষক ডেভিড স্টাহিল তাঁর ‘অপারেশন টাইফুন: হিটলার’স মার্চ অন মস্কো, অক্টোবর ১৯৪১ বইয়ে লিখেছেন, ১৯৪০ সালের ১৮ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের জন্য পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন হিটলার। ১৯৪১ সালের ২২ জুন সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে জার্মানি।

ডেভিড স্টাহিলের বইটি ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এই বইয়ে তিনি অপারেশন টাইফুনের কৌশলগত বিশ্লেষণ করেছেন এবং জার্মান উচ্চ কমান্ডের সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

প্রায় ৩৫ লাখ জার্মান সৈন্য ১ হাজার ৮০০ মাইল সীমান্ত এলাকাজুড়ে আক্রমণ শুরু করে। এ সৈন্যদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ছিল জার্মান এবং বাকিরা ছিল হিটলারের সহযোগী বিভিন্ন দেশের। হিটলারের প্যানজার ডিভিশন প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্যাংক এবং ২ হাজার ৭০০ যুদ্ধবিমান নিয়ে আক্রমণ শুরু করে।

পৃথিবীর ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় আক্রমণ। জার্মান সৈন্যরা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অগ্রসর হতে শুরু করে। প্রতিটি গ্রুপের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল।

সৈন্যদের তিনটি গ্রুপ ছিল উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য। উত্তরের দলটি বল্টিক দেশ লাটভিয়া, লিথুনিয়া ও এস্তোনিয়ার ভেতরে দিয়ে অগ্রসর হয়ে লেলিনগ্রাদে পৌঁছানোর কথা।

দক্ষিণের দলটি ইউক্রেন দিয়ে আক্রমণ শুরু করবে এবং ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ হয়ে দনবাস শিল্প এলাকা দখল করবে। মধ্য দলটি বেলারুশের মিনস্ক দিয়ে আগ্রসর হয়ে মস্কো পৌঁছবে। হিটলার ধারণা করেছিলেন, ১০ সপ্তাহের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করা যাবে।

অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের পশ্চিম সীমান্তে সৈন্য জড়ো করে। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, তারা যাতে কোনো উসকানি না দেয়। ওদিকে জোসেফ স্তালিন ধারণা করতে পারেননি যে জার্মানি এত তাড়াতাড়ি রাশিয়ায় আক্রমণ কর বসবে।

যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় ৫০ লাখ সৈন্য ছিল এবং ট্যাংক ছিল প্রায় ২৩ হাজার। জার্মানি যখন আক্রমণ করে, তখন সোভিয়েত রেড আর্মি প্রস্তুত ছিল না।

আরও পড়ুন

জার্মানির ভালো সূচনা

হিটলারের বাহিনী শুরুতেই চড়াও হয় সোভিয়েত বাহিনীর ওপর। জার্মান সৈন্যরা বেশ দ্রুত তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে শুরু করে। জার্মানির যুদ্ধবিমান আকাশে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

প্রথম দিনেই সোভিয়েত ইউনিয়নের ১ হাজার ৮০০ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে জার্মানি। অধিকাংশ বিমান তখন মাটিতেই ছিল। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সোভিয়েত ইউনিয়নের একের পর এক এলাকা দখল করে জার্মান সৈন্যরা। এ ছাড়া হাজার হাজার সোভিয়েত সৈন্য মারা যায়। আরও বহু সৈন্য আটক হয় জার্মানদের হাতে।

হিটলারের ভুল সিদ্ধান্ত

জার্মান বাহিনী যদি মস্কো দখল করে নিতো তাহলে সেটির মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়ত সোভিয়েত বাহিনীর ওপর। যুদ্ধের মোড় হয়তো তখন ভিন্ন দিকে ঘুরে যেত।

ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাময়িক বিরতি দিয়ে আবার যখন ‘অপারেশন টাইফুন’ শুরু হয়, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। তত দিনে সোভিয়েত বাহিনী শক্তি সঞ্চয় করে যুদ্ধের মাঠে ফিরে এসেছে।

এ ছাড়া তত দিনে জার্মান বাহিনীর অনেক শক্তি ক্ষয় হয়ে তারা দুর্বল হয়ে গেছে। এ ছাড়া তীব্র শীত তাদের কাবু করে ফেলেছিল।

আরও পড়ুন
১৯৪০ সালের মে মাসে হিটলার ফ্রান্স আক্রমণ করেন। মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফ্রান্স দখল করে নেন
ফাইল ছবি: এএফপি

স্তালিনগ্রাদ লড়াই

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী। হিটলারের অপারেশন বারবারোসা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৪২ সালের গ্রীষ্মকালে হিটলার এবার ভিন্ন দিক দিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করেন। লক্ষ্য ছিল তেলসমৃদ্ধ ককেশাস অঞ্চল দখল করে স্তালিনগ্রাদ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।

স্তালিনগ্রাদের এই যুদ্ধ ছিল বেশ কিছু সামরিক অভিযানের যোগফল। শহর দখলের জন্য হিটলারের নাৎসি বাহিনী তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের রেডফোর্সের সঙ্গে।

১৯৪২ সালের জুলাই মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলেছিল। শেষ পর্যন্ত এ যুদ্ধে হিটলারের বাহিনী পিছু হঠতে বাধ্য হয়। স্তালিনগ্রাদের এই যুদ্ধ প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।

আরও পড়ুন

জার্মান বাহিনীর পরাজয়

যুদ্ধের শেষ দিকে একের পর এক এলাকা থেকে জার্মান বাহিনীর পরাজয়ের খবর আসতে থাকে। সোভিয়েত রেড আর্মির সৈন্যরা জার্মানির বার্লিন ঘিরে ফেলেছে। ক্রমেই এগিয়ে আসছে হিটলারের বাংকারের দিকে। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল হিটলার তাঁর শেষ আশ্রয়স্থল, নতুন তৈরি চ্যান্সেলর ভবনের পাশের বাংকারে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর পথে সঙ্গী হন স্ত্রী ইভা ব্রাউন। তিনি বিষ পান করে মৃত্যুকে বেছে নেন। তার আগে হিটলার আর ইভা তাঁদের প্রিয় কুকুরকেও বিষ খাইয়ে হত্যা করেন।

হিটলারের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ১৯৪৫ সালের ৭ মে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সব ফ্রন্টে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয় জার্মানির নাৎসি বাহিনী। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির আনুষ্ঠানিক পরাজয় ঘটে। শেষ হয় ইতিহাসের চরম রক্তাক্ত এক অধ্যায়ের।

সূত্র: বিবিসি, ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু ফাউন্ডেশন, হলোকাস্ট এনসাইক্লোপিডিয়া, থটকো ডট কম