বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিতে তীব্র লড়াই চলছে

বাখমুত শহরের কাছে ট্যাংক নিয়ে প্রস্তুত ইউক্রেনের সেনারা
ছবি : রয়টার্স

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রনের সেনাদের সঙ্গে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার গ্রুপের তীব্র লড়াই চলছে। ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন গতকাল রোববার এসব কথা জানান। কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের দোনেৎস্কের বাখমুত শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রুশ সেনারা। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে বাখমুত শহরের এই লড়াইকে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সাম্প্রতি ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্রের সরবরাহ বাড়লেও ওই অঞ্চলের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে রুশ বাহিনী। ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান বলেন, আর্টেমভস্ক শহরের উত্তরাঞ্চলে প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি সিঁড়িতে ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী পিছু হটছে না। তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করছে।

গত শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, বাখমুতের জন্য কিয়েভের বাহিনী যত দিন সম্ভব লড়াই চালিয়ে যাবে। তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, গত সপ্তাহ থেকে রুশ বাহিনী বাখমুত ঘিরে ফেলার ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে গেছে।

বাখমুতের পাশাপাশি উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের খারকিভ শহরেও হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। গত রোববার রুশ বাহিনীর একটি ক্ষেপণাস্ত্র খারকিভের একটি আবাসিক ভবনে আঘাত করলে চারজন আহত হয়েছেন। পৃথক আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র খারকিভের একটি প্রতিষ্ঠানে আঘাত হানে।

এদিকে ইউক্রেনের পশ্চিমা রকেট, ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থার সঙ্গে উন্নত ট্যাঙ্ক দিয়ে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করছে। অস্ত্র সহযোগিতা নিয়ে গতকাল জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পশ্চিমা অস্ত্র রুশ ভূখণ্ডে আঘাত করবে না।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ৮০ বছর পর রাশিয়া আবারও জার্মানির ট্যাঙ্কের মুখোমুখি হচ্ছে। স্তালিনগ্রাদ যুদ্ধশেষের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দেওয়া ভাষণে এমন কথা বলেন তিনি। কিন্তু শলৎজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে এখনকার অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টির তুলনাকে প্রত্যাখ্যান করেন। শলৎজ বলেন, পুতিনের কথাগুলো অযৌক্তিক ঐতিহাসিক তুলনার একটি সিরিজের অংশ যা তিনি ইউক্রেনের ওপর তার আক্রমণকে ন্যায্যতা দিতে ব্যবহার করেন।

এদিকে যুদ্ধের মধ্যেই বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসেবে দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবকের মরদেহ উদ্ধার করে ইউক্রেনকে ফিরিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। ওই দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক হলেন ক্রিস প্যারি (২৮) ও অ্যান্ড্রু বাগশো (৪৭)। গত ৬ জানুয়ারি শেষবারের মতো এই দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবককে সোলেদার শহরে দেখা যায়। সোলেদার এখন রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি মস্কোর।