আইসল্যান্ডে প্রথমবারের মতো দেখা গেল মশা

মশাছবি: এএফপি

শীতপ্রধান দেশগুলোতে বসন্তকাল মানেই উৎসব। গাছে গাছে ফুল ফোটে, মানুষ আনন্দে মাতে। এ বছর বরফের দেশ আইসল্যান্ডেও এসেছিল বসন্ত। কিন্তু এই বসন্তে অনাকাঙ্ক্ষিত এক অতিথির দেখা পেয়েছেন আইসল্যান্ডবাসী। নতুন সেই অতিথি হলো মশা। এ বছর বসন্তে রেকর্ড গরমই এর কারণ বলে মত কীটতত্ত্ববিদের।

আইসল্যান্ডে পোকামাকড় নিয়ে কাজ করেন বিয়র্ন হ্যালটাসন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, তিনি প্রজাপতি পর্যবেক্ষণ করেন। গত সপ্তাহে এ কাজ করতে গিয়ে তিনি কয়েক রাতে মশার দেখা পেয়েছেন।

ওই মশার দল থেকে হ্যালটাসন দুটি স্ত্রী মশা এবং একটি পুরুষ মশা ধরেন। পরে সেগুলো কুলিসেটা অ্যানুলাটা প্রজাতির বলে নিশ্চিত করা হয়। মশার যে কয়েকটি প্রজাতি ঠান্ডার মধ্যেও বেঁচে থাকতে পারে, তার একটি হচ্ছে এটি।

এত দিন বিশ্বের মাত্র দুটি অঞ্চল মশামুক্ত ছিল। একটি আইসল্যান্ড, অন্যটি অ্যান্টার্কটিকা। মূলত বরফ ও ঠান্ডার কারণেই এ দুটো অঞ্চলে মশা দেখা যেত না। এখন আইসল্যান্ডেও পৌঁছে গেছে মশা!

আইসল্যান্ডের রাজধানী রিকজাভিকের দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থিত একটি হিমবাহ উপত্যকায় মশাগুলো পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলেছে, হ্যালটাসন তাঁর খুঁজে পাওয়া নতুন পতঙ্গের ছবি স্থানীয় বন্য প্রাণী–সম্পর্কিত একটি ফেসবুক পাতায় শেয়ার করেন।

পোস্টে হ্যালটাসন লেখেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম, এটি এমন কিছু, যা আগে কখনো দেখিনি। শেষ দুর্গটিও ভেঙে পড়েছে মনে হচ্ছে।’

হ্যালটাসন তাঁর সঙ্গে থাকা নতুন পতঙ্গগুলো শনাক্ত করার জন্য আইসল্যান্ডের ন্যাচারাল হিস্ট্রি ইনস্টিটিউটে পাঠান। সেখানে কীটতত্ত্ববিদ ম্যাথিয়াস আলফ্রেদসন নিশ্চিত করেন যে সেগুলো মশা।

সিএনএনকে আলফ্রেদসন বলেন, ইউরোপের একটি অংশ এবং উত্তর আফ্রিকাজুড়ে মশার বিস্তার রয়েছে। কিন্তু সেগুলো কী করে আইসল্যান্ডে পৌঁছে গেল, তা তিনিও নিশ্চিত নন।

আইসল্যান্ডের বরফঠান্ডা পরিবেশ এবং মশা প্রজননের উপযোগী স্থির পানির জলাধার না থাকায় দেশটিতে মশা দেখা যেত না। কিন্তু এ বছর দেশটি একাধিকবার রেকর্ড তাপমাত্রা দেখেছে।

আইসল্যান্ডের সবচেয়ে উষ্ণ মাস মে। তবে সাধারণত মে মাসেও তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে খুবে বেশি দেখা যায় না।

কিন্তু এ বছরের মে মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছেছিল।

অনাকাঙ্ক্ষিত এই অতিথি পথ ভুলে আইসল্যান্ডে এসে পড়েছে, নাকি সত্যি সত্যি ঘাঁটি গেড়ে বসেছে, তা নিশ্চিত হতে আরও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন কীটতত্ত্ববিদ আলফ্রেদসন।