পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করতে চায় ইউক্রেন

ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের নিয়ন্ত্রণ ইউক্রেনকে দিতে পশ্চিমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ। তাদের ভাষ্য, এই অর্থ তারা তাদের দেশের পুনর্গঠন এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ব্যবহার করতে পারবে।

২০২২ সালে মস্কোর আগ্রাসনের পর থেকে পশ্চিমারা রাশিয়ার যেসব ব্যাংক হিসাব, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সম্পদ জব্দ করেছে, সেগুলোর শত শত কোটি ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য তহবিল গঠন করতে ওয়াশিংটন ও ইউরোপে জোর দাবি উঠেছে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিস শিমগাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাশিয়ার যেসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে, সেগুলো আমাদের রাষ্ট্র ও তহবিল পুনরুদ্ধারের জন্য নির্ভরযোগ্য উৎস হতে পারে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে টিকে থাকতে তাদের এই মুহূর্তে ব্যাপক ভার আরও সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন বলে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে ইউক্রেন। অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেসে ৬ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ ইউক্রেনের আটকে আছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে বিদেশি সহায়তার এই বিলের বিরোধিতা করছে সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা।

আরও পড়ুন

ড্যানিস শিমগাল পশ্চিমাদের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। কারণ, সামনেই নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। এতে তাদের এই উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সময় ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক উত্থান-পতন নির্বিশেষে আমাদের স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ দরকার।’

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন গত সপ্তাহে বলেছিলেন, সম্পদ (রাশিয়ার) জব্দ করে সেগুলো ইউক্রেনকে দেওয়ার জোরালো ‘নৈতিক কারণ’ রয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া প্রতিবেশী ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোয় রাশিয়ার যে সম্পদ ছিল, তা জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুন

এই প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জি-৭-ভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ৩২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার জব্দ করে।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য শুরু থেকেই রাশিয়ার জব্দ করা অর্থ ব্যবহারের পক্ষে ছিল। তবে ইইউ কর্তৃপক্ষ মনে করছিল, এটা আইনগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

রাশিয়ার যত সম্পদ জব্দ হয়েছে, তার বড় অংশ আছে ইইউতে। এর বড় অংশ আবার বেলজিয়ামের ক্লিয়ারিং হাউস ইউরো ক্লিয়ারিংয়ের হাতে জব্দ। এখন বেলজিয়ামের হাতে যেসব সম্পদ আছে, তার ওপর ধার্য করা কর ইউক্রেনের পুনর্গঠনে ব্যবহারের লক্ষ্যে আলাদা করা যাবে। এই তহবিল ব্যবস্থাপনা করে বেলজিয়াম সরকার।

গত বছর বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে দেশটির কমপক্ষে ৪১১ বিলিয়ন বা ৪১ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার লাগবে। সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও তাদের মিত্ররা রাশিয়ার কাছ থেকে কোনোভাবে এই অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা করতে চাইছে।