পুতিন নিজেই বাশার আল-আসাদের আশ্রয় অনুমোদন করেছেন: ক্রেমলিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে মস্কোতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন। সোমবার ক্রেমলিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিদ্রোহীদের হাতে দামেস্কের পতনের পর সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর পরিবার রাশিয়ায় পৌঁছেছে, এমন খবরের পর নতুন এই তথ্য জানা গেল। তবে তিনি ঠিক কোথায় আছেন, তা জানায়নি ক্রেমলিন।
পুতিনের দিনের কার্যতালিকায় বাশারের সঙ্গে বৈঠকের কোনো কর্মসূচি ছিল না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, ‘আসাদের অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলার কিছু নেই।’
এর আগে এএফপির এক খবরে বলা হয়েছিল আসাদ রাশিয়ায় আছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ক্রেমলিন। উল্টো বলেছে, বিদ্রোহীরা দেশটি দখলে নেওয়ার ঘটনায় তারা ‘হতবাক’।
তবে আরটি জানিয়েছে, আসাদ কীভাবে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পেসকভ বলেন, ‘রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, এটা তাঁর সিদ্ধান্ত।’
রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক মিখাইল উলিয়ানভ সোমবার সকালের দিকে বলেছিলেন, আসাদ ও তাঁর পরিবার মস্কোতে আছেন। তিনি বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাশিয়া তাঁর মিত্রদের প্রতি যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এটা তার প্রমাণ।
মিখাইল উলিয়ানভ আরও বলেন, ‘সংঘাতময় পরিস্থিতিতে রাশিয়া তার বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে না।... (রাশিয়া) যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়।’
রোববার রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করে’ বাশার ও তাঁর পরিবারকে রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বাশার পদত্যাগ করতে সম্মত হয়েছেন। ‘শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর’ করতে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সরকারবিরোধী অন্য গোষ্ঠীগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রোববার দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর আগে তারা ঝড়ের গতিতে সিরিয়ার কয়েকটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। মাত্র ১২ দিনের অভিযানে বাশার আল–আসাদের সরকারের পতন ঘটায় তারা।
সিরিয়ায় রাশিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সেনা ও নৌঘাঁটি রয়েছে। ২০১৫ সালে তারা বাশার আল–আসাদ সরকারের পক্ষ নিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু করে। পেসকভ বলেন, ‘অস্থিরতার কারণে এখন একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’
এখন রাশিয়ার সেই ঘাঁটিগুলোর কী হবে, জানতে চাইলে পেসকভ বলেন, ‘এখনই কিছু বলার মতো সময় হয়নি। সিরিয়ায় যারা ক্ষমতায় যাবে, এটি তাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়।’ তিনি বলেন, এই ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
পেসকভ আরও বলেন, ‘যারা এই নিরাপত্তা দিতে পারবে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমরা সম্ভাব্য এবং প্রয়োজনীয় সবকিছু করছি। পাশাপাশি আমাদের সামরিক বাহিনীও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে।’