তিন বছর পর আবার মুখোমুখি আলোচনায় রাশিয়া-ইউক্রেন

বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, ১৬ মে ২০২৫ছবি: রয়টার্স

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে আজ শুক্রবার শান্তি আলোচনা শুরু করেছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। তিন বছরের বেশি সময় পর দুই দেশের মধ্যে এটাই প্রথম সরাসরি শান্তি আলোচনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা যায়, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বসফরাসের তীরে অবস্থিত বিলাসবহুল দোলমাবাহচ প্রাসাদে রুশ ও ইউক্রেনীয় আলোচকদের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের অর্ধেক সদস্য সামরিক পোশাক পরে ছিলেন এবং তাঁরা একটি টেবিলে তাঁদের প্রতিপক্ষ রুশ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি বসেছিলেন, যাঁরা স্যুট পরা অবস্থায় উপস্থিত ছিলেন।

ফিদান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি। শান্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে একটি নতুন সম্ভাবনার জানালা খুলতে চাওয়ার ইচ্ছা দেখে তিনি আনন্দিত। ইস্তাম্বুলের এ আলোচনা দুই দেশের নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠকের ভিত্তি তৈরি করুক, এটাই তাঁর চাওয়া।

ফিদান আরও বলেন, ‘আমাদের সামনে দুটি পথ রয়েছে। একটি পথ শান্তির দিকে নিয়ে যাবে, অন্যটি আরও ধ্বংস ও মৃত্যুর দিকে। কে কোন পথ বেছে নেবে, তা উভয় পক্ষকেই তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা চলছে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দোলমাবাহচ কার্যালয়ে। কার্যালয়ের বাইরে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ, ১৬ মে ২০২৫
ছবি: রয়টার্স

ইস্তাম্বুলের এ আলোচনা থেকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির সম্ভাবনা আগে থেকেই কম। তবে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় গত বৃহস্পতিবার তা আরও কমে যায়, যখন তিনি জানান যে তাঁর সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক না হলে কোনো অগ্রগতি হবে না।

ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান কিয়েভের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরে বলেন, শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যদি রাশিয়া প্রাথমিকভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধের অবসান চান এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে তাঁরা একাধিক প্রশ্ন ও উদ্বেগ তুলেছেন। তাঁরা বলছেন, ইউক্রেন এ বিরতির সুযোগ নিয়ে নিজেদের বাহিনীকে আবার সংগঠিত করতে, অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও আরও পশ্চিমা অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে।

অপর দিকে ইউক্রেন ও তার মিত্ররা পুতিনের বিরুদ্ধে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ এনে বলছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে শান্তি চাইছেন না।