পুতিনের ‘তাত্ত্বিক গুরুর’ মেয়ে গাড়িবোমা হামলায় নিহত

আলেকসান্দর দাগিন ও তাঁর মেয়ে দারিয়া দাগিনা
ছবি: বিবিসি/টুইটার

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মেয়ে রাজধানী মস্কোর কাছে গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহত নারীর নাম দারিয়া দাগিনা। একটি অনুষ্ঠান থেকে বাসায় যাওয়ার সময় তাঁর গাড়িটি বিস্ফোরিত হয়।

দারিয়ার বাবার নাম আলেকসান্দর দাগিন। ৬০ বছর বয়সী আলেকসান্দর একজন দার্শনিক। তিনি পুতিনের ‘মস্তিষ্ক’ নামে পরিচিত। হামলার লক্ষ্যবস্তু আলেকসান্দর ছিলেন কি না, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন

দাগিন একজন আলোচিত উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক তাত্ত্বিক। তাঁকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।

রাশিয়ার একটি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠান থেকে বাবা-মেয়ের একসঙ্গে একই গাড়িতে করে বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আলেকসান্দর আলাদাভাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে টেলিগ্রামে ফুটেজ পোস্ট করা হয়েছে। তবে এ ফুটেজ যাচাইকৃত নয়।

ফুটেজে দেখা যায়, একটি গাড়ির ধ্বংসাবশেষ জ্বলছে। জরুরি পরিষেবা ঘটনাস্থলে তৎপর হয়েছে। আলেকসান্দর হতবাক হয়ে এ দৃশ্য দেখছেন।

বিবিসি স্বাধীনভাবে এ ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি। ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত রুশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রুশ সরকারে আলেকসান্দরের কোনো পদ–পদবি নেই। তবে তিনি পুতিনের অত্যন্ত কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত। অনেকে তাঁকে পুতিনের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ বলেও অভিহিত করেন।

আরও পড়ুন

আলেকসান্দরের মেয়ে দারিয়া একজন পরিচিত সাংবাদিক ও ভাষ্যকার ছিলেন। তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের সমর্থক ছিলেন।

পুতিনের নির্দেশে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এ অভিযান এখনো চলছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে দারিয়ার ওপর যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউক্রেনে রুশ হামলার বিষয়ে অনলাইনে ‘গুজব’ ছড়ানোয় ভূমিকা রাখার জন্য ৩০ বছর বয়সী এ নারীকে অভিযুক্ত করে যুক্তরাজ্য।

দারিয়ার বাবা আলেকসান্দরের উগ্র জাতীয়তাবাদী লেখা পুতিনের বিশ্বদর্শনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে আসছে বলে মনে করা হয়। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের সঙ্গে আলেকসান্দর ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে ধারণা করা হয়।

আলেকসান্দর আগে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৪ সালে মস্কোর ক্রিমিয়া দখলের ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে ২০১৫ সালে তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।