মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে জার্মানিতে মামলা

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং
ছবি: রয়টার্স

জার্মানিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন ও মিয়ানমার থেকে নির্বাসিত একদল ব্যক্তি দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে জার্মানিতে মামলা করেছেন। মঙ্গলবার জার্মানির কার্লসুরুহে শহরে অবস্থিত জার্মান সুপ্রিম কোর্টে ফৌজদারি মামলাটি করা হয়।

জার্মানির গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের এই মামলা আদালত আমলে নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মামলার অভিযোগনামা দায়ের করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, কার্লসরুহে শহরে অবস্থিত ফেডারেল প্রসিকিউটর অফিস রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত গণহত্যা এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে সংঘটিত অপরাধ তদন্ত করবে।

মামলাটি করতে সহযোগিতা করেছে ‘ফর্টিফাই রাইটস’ নামে জার্মানির একটি মানবাধিকার সংগঠন। তাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের মধ্যে ৬ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ রয়েছেন। তাঁরা সবাই সামরিক জান্তার অপরাধ ও নির্মমতার সাক্ষী। তাঁরা মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু এবং মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ।

এ বিষয়ে ফর্টিফাই রাইটসের নির্বাহী পরিচালক ম্যাথিউ স্মিথ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মনোযোগ সত্ত্বেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখনো পূর্ণ দায়মুক্তি উপভোগ করছে। এর বিহিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসা করতে হবে।

জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডের স্পিগেল ও এফেংঙ্গলিস প্রেস সার্ভিস এই মামলার খবর প্রকাশ করে জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা আগামী সপ্তাহে তাদের অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় বার্ষিকী পালন করবে। এই জান্তা দেশটিতে তাদের বিরোধীদের শক্ত হাতে দমন করছে। বিরোধীদের ওপর হামলা ও কঠোর নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। এর পর থেকে মিয়ানমারের নির্বাচিত এই নেত্রী সামরিক বাহিনীর হেফাজতে আছেন। একই সঙ্গে দেশটিতে চলছে জান্তা সরকারের বিরোধীদের ওপর চরম দমন-পীড়ন।

এর আগে ২০১৭ সালের আগস্টের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ব্যাপক দমন-নিপীড়ন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।