খেরসনের ২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিল ইউক্রেন বাহিনী
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে বড় অগ্রগতি হয়েছে দেশটির সেনাদের। এ অঞ্চলের খেরসন শহর থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পরপরই এই অগ্রগতির খবর এসেছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর দখল থেকে ১২টি স্থাপনা মুক্ত করেছে তারা। একই সঙ্গে ২০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি বার্তা আদানপ্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেন, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের সেনারা সাত কিলোমিটার সামনের দিকে এগিয়েছেন, দখলে এসেছে ১২টি স্থাপনা। দখলের এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে খেরসন শহর থেকে আদৌ রুশ সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত নন তিনি।
খেরসন অঞ্চলের রাজধানী খেরসন শহর। সেখান থেকে ৫৫ কিলোমিটার উত্তরে স্নিহুরিভকা গ্রাম। আজ এই গ্রামের দখল নেন ইউক্রেনের সেনারা। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ইউক্রেনের সেনাদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন স্নিহুরিভকা গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। এ সময় তাঁদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
গতকাল বুধবার সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় মস্কো। খেরসন শহর ছাড়াও নিপার নদীর পশ্চিম পার থেকে রুশ সেনাদের সরিয়ে নিতে বলা হয় ওই নির্দেশনায়। বিগত ৯ মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনে বিভিন্ন অঞ্চলের রাজধানীগুলোর মধ্যে শুধু খেরসন শহরই রাশিয়ার দখলে ছিল।
এদিকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কিয়েভের কর্মকর্তারা। তাঁদের ধারণা, এলাকাগুলো ছেড়ে যাওয়ার আগে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারেন রুশ সেনারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মুখপাত্র মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, রাশিয়া খেরসনকে ‘মৃতদের শহর’ বানাতে চাইছে। শহরের সব জায়গায় তারা মাইন পুঁতে রেখেছে। এমনকি নিপার নদীর পূর্ব পার থেকে খেরসন শহরে গোলাবর্ষণের পরিকল্পনা করছে তারা।
গত সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনে নিজেদের দখলে থাকা চার অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে অঙ্গীভূত করার ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই অঞ্চলগুলোর একটি ছিল খেরসন। এর এক মাসের কিছুটা বেশি সময় পর খেরসন শহরে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ মস্কোর জন্য বড় পরাজয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। আর সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার সমর্থন দিলেও এটি রাশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছে ক্রেমলিনপন্থী বিভিন্ন পক্ষ ও রুশ গণমাধ্যমগুলো।
রুশ সংবাদমাধ্যম রাশিয়ান টাইমস-এর (আরটি) প্রধান মারগারিতা সিমোনইয়ান বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, সেনা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত কারও জন্য সহজ নয়। যাঁরা সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন তাঁদের জন্য নয়, আমাদের জন্যও নয়। তবে এখনো প্রার্থনা করছি এমনটি শেষ পর্যন্ত ঘটবে না।’