ইইউতে প্রথম ছয় মাসে আশ্রয়প্রার্থী বেড়েছে ২৮ শতাংশ

ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ছবি: রয়টার্স

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন গত বছরের তুলনায় বাড়ছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আবেদনের সংখ্যা ২৮ শতাংশ বেড়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে আশ্রয়প্রার্থী–বিষয়ক সংস্থা (ইইউএএ) জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের শেষ নাগাদ ইইউ সদস্যভুক্ত ২৭টি দেশ এবং সহযোগী সদস্যদেশ সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েতে ৫ লাখ ১৯ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েছে।

আশ্রয়প্রার্থীদের এই গতি অব্যাহত থাকলে বছরের শেষ নাগাদ ১০ লাখের বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়তে পারে। এর আগে ২০১৫-২০১৬ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর ওই সময় বিপুল পরিমাণ সিরীয় উদ্বাস্তু ইউরোপে আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

২০১৫ সালে ইইউতে প্রায় ১৩ লাখ ৫০ আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছিল। পরের বছর ২০১৬ সালে প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার আশ্রয় আবেদন জমা পড়ে।

২০১৭ সালের ইইউ তুরস্কের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তির আওতায় তুর্কি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়, যাতে অবৈধভাবে অভিবাসীরা ইউরোপে ঢুকতে না পারেন। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের সময় ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমে আসে।

ইইউএএ বলছে, এখন আবার সেই সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ২০২২ সালে আগের বছরগুলোর তুলনায় প্রায় ৫৩ শতাংশ আশ্রয় আবেদন বেড়েছে। এতে অভিবাসীদের নিয়ে আবার চাপের মধ্যে পড়েছে ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলো।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর বিপুল পরিমাণ ইউক্রেনীয় আশ্রয়প্রার্থী ইইউভুক্ত দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের সংখ্যা ৪০ লাখের কম নয়। এই আশ্রয়প্রার্থীরা অন্যদের চেয়ে আলাদা মর্যাদা পান। তাঁদের সুরক্ষা মর্যাদায় ইইউ দেশগুলোকে আশ্রয় দিতে হচ্ছে। তাঁদের নিয়ে এমনিতেই বেশ চাপের মধ্যে আছে ইউরোপ।

চলতি বছর মোট আশ্রয়প্রার্থী আবেদনকারীদের এক–চতুর্থাংশ হচ্ছে সিরীয়া ও আফগান। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলা, তুরস্ক, কলম্বিয়া, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।

২০১৫-২০১৬ সালে সিরীয় শরণার্থীদের বড় অংশকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি। এখনো ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, বিশেষ করে সিরীয় ও আফগান আশ্রয়প্রার্থীরা জার্মানিতে আসছেন।

২০২৩ সালে ইইউতে মোট আশ্রয়প্রার্থী আবেদনের ৬২ শতাংশ জমা পড়েছে জার্মানিতে।
ভেনেজুয়েলার আশ্রয়প্রার্থীদের প্রধান গন্তব্য স্পেন। সেখানে তাঁরা আশ্রয়প্রার্থী মর্যাদার চেয়ে বরং মানবিক বিবেচনায় বেশি ভিসা পেয়ে থাকেন। সে দেশে তাঁদের আশ্রয় আবেদনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সংঘাতপীড়িত সিরিয়া ও আফগানিস্তানের আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তুর্কি আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।

ইইউএএ বলছে, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এখন ইরান ও রাশিয়ার আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপে বিশেষ সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে।