কৌতুক করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থনা

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিফাইল ছবি: রয়টার্স

নারীদের নিরাপত্তায় সবচেয়ে বেশি সহায়ক ভূমিকা থাকার কথা তাঁর। অথচ ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি উল্টো কাজ করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন।

এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, ঘটনাটি ঘটেছে একেবারে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের ব্যক্তিগত পরিসরের আলাপচারিতায়। এর মাধ্যমে উদ্দেশ্য ও পরিসরকে ছোট করে দেখাতে চাইলেও জেমস ক্লেভারলি আসলে এমন এক কৌতুক করেছিলেন, যা কোনো মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তি তো বটেই, সচেতন, শান্তিকামী এবং নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো নাগরিকের কাছেই আশা করা যায় না।

ব্রিটেনের ট্যাবলয়েড পত্রিকা সানডে মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মাসে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে খুব রসিকতায় মেতে উঠেছিলেন জেমস ক্লেভারলি। একপর্যায়ে দীর্ঘ বৈবাহিক জীবনের রহস্য জানাতে গিয়ে ঋষি সুনাকের মন্ত্রিপরিষদের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী বলেন, তাঁর স্ত্রীকে সব সময় হালকা নেশাচ্ছন্ন অবস্থায় রাখা হয়, যাতে তাঁর (স্ত্রী) পাশে যে আরও আকর্ষণীয় পুরুষ আছেন, তা কখনোই তিনি বুঝতে না পারেন।

ঠাট্টার ছলে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘স্ত্রীর পানীয়তে একটু মাদক মিশিয়ে দেওয়া বেআইনি নয়।’

এর মাধ্যমে জেমস ক্লেভারলি এমন এক মাদকের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন, যা নারীদের ধর্ষণ করার জন্য পুরুষেরা ডেটিংয়ের সময় ব্যবহার করেন। এ কারণে মাদকটি ‘ডেট-রেপ ড্রাগ’ নামে পরিচিত। বিস্ময়কর বিষয় হলো, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চলতি মাসের যেদিন ‘ডেট-রেপ ড্রাগ’-এর সীমিত ব্যবহার সমর্থন করে রসিকতা করেন, ঠিক সেদিনই ব্রিটেনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন কঠোর করে হলেও পানীয়তে মাদক মিশিয়ে অচেতন করে নারী ধর্ষণের প্রবণতা রোধের ঘোষণা দেয়।

এমন মন্তব্যের খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পরই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। নারী অধিকার সংগঠন দ্য ফসেট সোসাইটি এক্সে (সাবেক টুইটার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে। বিরোধী দল লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা ইভেট কুপার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘স্পাইকিং (পানীয়তে মাদক মেশানো) খুব গুরুতর ও ধ্বংসাত্মক অপরাধ।’

এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধের দায়িত্ব যাঁর, সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই মনে করেন, এমন কৌতুক করা যেতেই পারে, এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। তিনি যে এই জঘন্য অপরাধটিকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে পারবেন, ভুক্তভোগীরা তা বিশ্বাস করবেন কীভাবে?’