গ্রিনল্যান্ড কী চায়, সাফ জানালেন প্রধানমন্ত্রী এগেদে

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেদে। ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫ছবি: রয়টার্স

আর্কটিক অঞ্চলের দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেদে শুক্রবার বলেন, গ্রিনল্যান্ড আমেরিকান হতে চায় না। ডেনমার্কের অধীনেও যেতে আগ্রহী নয়। গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে প্রয়োজনে সামরিক আর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর পর এ কথা বললেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে গ্রিনল্যান্ডের ‘মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ’ পাওয়ার অভিপ্রায়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এর পর থেকে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেদে বলেছিলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়’।

আরও পড়ুন

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিউট এগেদে বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড নিজের মানুষের (গ্রিনল্যান্ডিক) জন্য। আমরা ড্যানিশ হতে চাই না। আমেরিকানও হতে চাই না। আমরা গ্রিনল্যান্ডিক হতে চাই।’

মিউট এগেদে আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা নিয়ে আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমাদের নিজেদের বাড়ি নিয়ে একটা আকাঙ্ক্ষা রয়েছে...এবং সবার এটার প্রতি সবার শ্রদ্ধা থাকা উচিত।’

গ্রিনল্যান্ডের হিমশৈলর কাছে মাছ ধরার নৌকা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডেরিকসেনের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর অর্থ এটা নয়, আমরা সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করব। ডেনমার্কের সঙ্গে সব সহযোগিতা, সব সম্পর্ক আগের মতো অটুট থাকবে।’

এ সময় ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রিনল্যান্ডের স্বাধীনতা ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ঘোষণা নিয়ে চলমান বিতর্ক এটা প্রমাণ করে যে দ্বীপরাষ্ট্রটি নিয়ে বড় স্বার্থ রয়েছে। এসব ঘটনা গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের অনেকের মনে অনেক চিন্তাভাবনা ও অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।

আরও পড়ুন

গত মাসে ট্রাম্পের এক মন্তব্য গ্রিনল্যান্ড নিয়ে বিতর্ক নতুন করে উসকে দেয়। ডিসেম্বরে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি।

গ্রিনল্যান্ডের দিকে নজর ট্রাম্পের এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ২০১৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদের সময় গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। তবে ওই সময় ডেনমার্ক তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।

আরও পড়ুন

শুধু ট্রাম্প নন, এর আগে ১৮৬০-এর দশকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসনের শাসনামলে গ্রিনল্যান্ড দ্বীপ কেনার কথা তোলা হয়েছিল।

গ্রিনল্যান্ড দ্বীপটি ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রকল্পসংক্রান্ত স্থাপনা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত এই দ্বীপ অঞ্চলটির অবস্থান উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম জলপথে। এই দ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদেরও মজুত আছে।

আরও পড়ুন