রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিশ্বনেতাদের বাসে চড়ে যেতে অনুরোধ

১৯ সেপ্টেম্বর রানির রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবেছবি: রয়টার্স

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজে যুক্তরাজ্যে যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর বিমানবন্দর থেকে বাসে অনুষ্ঠানস্থল পর্যন্ত যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হবে।

১৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সূত্রের বরাতে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৫০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন।

মার্কিন সংবাদ পলিটিকোর বরাতে এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আয়োজিত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে কিংবা ওই সময় লন্ডনের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে অতিথিদের নিজস্ব গাড়ি বা হেলিকপ্টার ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর বদলে তাঁদের নিরাপত্তা বাহিনীর পাহারায় পরিচালিত বাস ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এ বাসগুলো পশ্চিম লন্ডনের একটি এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকবে। সেখান থেকে এগুলোতে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাতে পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদেশি দূতাবাসগুলোয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রটোকল বার্তা পাঠানো হয়েছে।

পলিটিকোর ওই প্রতিবেদনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উপলক্ষে ‘কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সড়কে জারি করা বিধিনিষেধ’ নিশ্চিত করাকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ নিয়মের কথা শুনে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করছেন।

আরও পড়ুন

লন্ডনভিত্তিক এক বিদেশি কূটনীতিক পলিটিকোকে বলেন, ‘আপনারা জো বাইডেনকে বাসে কল্পনা করতে পারেন?’ নিয়ম অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা দীর্ঘ যাত্রার ক্ষেত্রে এয়ারফোর্স ওয়ান বিমান ব্যবহার করে থাকেন। গন্তব্যস্থলের বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে তাঁরা মেরিন ওয়ান হেলিকপ্টার কিংবা সাঁজোয়া লিমোজিন গাড়ি ব্যবহার করে থাকেন।

লন্ডনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে উল্লেখ করেছে এএফপি। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের এক মুখপাত্রের বরাতে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগত অতিথিভেদে আলাদা নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

১৯ সেপ্টেম্বর রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাবেষ্টিত রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানগুলোর একটি। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারো পুলিশ কর্মকর্তাকে লন্ডনে মোতায়েন করা হবে। তাঁরা মানুষের ভিড় সামাল দেওয়ার কাজে নিযুক্ত থাকবেন।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগের চার দিনে রানির মরদেহ পার্লামেন্ট ভবনে রাখা হবে। ওই কয়েক দিনে বিভিন্ন দেশের নেতা ও রাজপরিবারের সদস্যরাসহ প্রায় ১০ লাখ মানুষ রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লন্ডনের রাস্তায় জড়ো হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আগত নেতারা রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। এর জন্য তিন মিনিট সময় পাবেন তাঁরা। ল্যানকেস্টার হাউসে শোক বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।

গতকাল সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের মুখপাত্র বলেন, রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগের দিন রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর)রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করবে যুক্তরাজ্য। এদিন রাত আটটার দিকে নীরবতা পালন করা হবে।

আরও পড়ুন

রানির মরদেহ এখন এডিনবরার সেন্ট গিলস ক্যাথেড্রালে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা আছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তা সেখানেই থাকবে। এরপর মরদেহ নেওয়া হবে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসে। সেখান থেকে মরদেহ ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নেওয়া হবে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগপর্যন্ত চার দিন মরদেহ সেখানেই থাকবে।