যুক্তরাজ্যে প্রিন্স হ্যারি, ক্যানসার আক্রান্ত বাবার সঙ্গে এবার সাক্ষাৎ হবে কি
ক্যানসার আক্রান্ত বাবা রাজা চার্লসের সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর দেড় বছরের বেশি সময় গড়িয়েছে। অসুস্থ শিশুদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আবার নিজ দেশ যুক্তরাজ্যে এসেছেন প্রিন্স হ্যারি। থাকবেন কয়েক দিন। যুক্তরাজ্যে প্রায় সবার মুখে এখন একই প্রশ্ন—এই সময়ে বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে কি দেখা করবেন তিনি?
বাবার সঙ্গে সন্তানের সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন কেন—পাল্টা এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। আসলে কয়েক বছর ধরে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্কটা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। ২০২০ সালে রাজপরিবারকে বিদায় জানিয়ে স্ত্রী–সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমিয়েছিলেন হ্যারি। তার পর থেকে আত্মজীবনী কিংবা সাক্ষাৎকার—নানা জায়গায় নানাভাবে পরিবারের সমালোচনা করেছেন তিনি।
২০২৪ সালে চার্লসের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটে আসেন হ্যারি। চার্লসের বাসা ক্লারেন্স হাউসে খুবই অল্প সময়ের জন্য দেখা করেন দুজন। তারপর রাতটা কোনোরকমে লন্ডনের হোটেলে কাটিয়ে পরদিনই যুক্তরাষ্ট্র চলে যান হ্যারি। তখন থেকে আরও তিনবার যুক্তরাজ্য এসেছেন তিনি। তবে ৭৬ বছর বয়সী বাবার সঙ্গে দেখা করেননি।
এমন মন–কষাকষির মধ্যে গত মে থেকে হ্যারির মধ্যে কিছুটা বদল আসতে দেখা গেছে। তখন বিবিসিকে তিনি বলেছিলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারলে আমার ভালো লাগবে। আমি জানি না বাবার কাছে আর কত দিন সময় আছে।’ চার্লস তাঁর ওপর মনঃক্ষুণ্ন—এমন ইঙ্গিত দিয়ে হ্যারি বলেছিলেন, ‘বাবা হয়তো আমার সঙ্গে কথা বলবেন না। তবে একসঙ্গে হতে পারলে ভালো হবে।’
হ্যারির ওই আহ্বানের পর আরও আশার আলো দেখা যায় গত ৯ জুলাই। সেদিন লন্ডনে রাজার প্রেস সেক্রেটারি টোবিন আন্দ্রিয়ের সঙ্গে হ্যারির যোগাযোগপ্রধান মেরেডিথ মারিনসকে বৈঠক করতে দেখা যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজপুত্রের যুক্তরাজ্যবিষয়ক মুখপাত্র লিয়াম ম্যাগুইর। গত রোববার ওই বৈঠকের ছবি সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল–এ প্রকাশের পর বাবা–ছেলের মিলন নিয়ে গুঞ্জন আরও বেড়েছে।
এ নিয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করেনি বাকিংহাম প্যালেস। তবে রাজপরিবার সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন—এমন ব্যক্তিরা সাক্ষাতের বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ইতিহাসবিদ এড ওয়েনস বলেন, ‘আমি মনে করি, সাক্ষাতের সম্ভাবনা আছে। এ নিয়ে রাজারও আগ্রহ রয়েছে।’ আর রাজপরিবার বিশেষজ্ঞ রিচার্ড ফিটজ উইলিয়ামসের ভাষ্য, যদি বাবা–ছেলের সাক্ষাৎ হয়ও, তা হবে সাধারণের চোখের আড়ালে। আর এটি হবে পরিবারের পুনর্মিলনের প্রথম পদক্ষেপ।