সেনাবাহিনীতে সদস্যসংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়ানোর নির্দেশ পুতিনের

ভ্লাদিমির পুতিন
ফাইল ছবি

রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে ১০ শতাংশ সদস্য বৃদ্ধির বিষয়ে এক ডিক্রিতে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের সই করা ডিক্রি অনুযায়ী, আগামী মাসগুলোতে দেশটির সেনাবাহিনীতে ১ লাখ ৩৭ হাজার সেনা নিয়োগ করা হবে। খবর বিবিসির।

বর্তমানে রাশিয়ার ১০ লাখের মতো সামরিক কর্মকর্তা ও ৯ লাখের মতো বেসামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন। পুতিনের ডিক্রি জারির ফলে দেশটিতে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বাড়বে। সেনাবাহিনীতে নিয়োগের জন্য আগ্রহী ব্যক্তিদের বড় অঙ্কের নগদ অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেওয়া হবে।

পশ্চিমা সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে গিয়ে রাশিয়ার ৭০ থেকে ৮০ হাজার সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। গত বুধবার এ হামলার ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে।
রুশ বাহিনীতে সেনাসদস্য হিসেবে নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কারাগার পরিদর্শন করছেন বলেও খবর বেরিয়েছে। মুক্তি প্রদান ও নগদ অর্থের প্রস্তাব দিয়ে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কারাবন্দীদের।

দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। একটি নতুন সেনা কোর তৈরির উদ্দেশ্যেই এ ব্যাটালিয়ন তৈরি করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য স্বেচ্ছাসেবী ব্যাটালিয়নে যোগ দেওয়া লোকের সংখ্যা সীমিত। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, সেনাবাহিনীর জন্য নতুন সেনা পাওয়া কঠিন হবে দেশটির জন্য।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করে, তখন বলা হয়েছিল, তাদের এটি বিশেষ সামরিক অভিযান। স্বল্প সময়ে এ অভিযান শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ক্রেমলিন। কিন্তু ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে তাদের অগ্রযাত্রা থেমে যায়। বর্তমানে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সম্মুখযোদ্ধারা খুব বেশি এগোতে পারছেন না।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে সম্প্রতি নতুন ডিক্রি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৮ করা উচিত। এর মধ্যে ১১ লাখ ৫০ হাজার ৬২৮ কর্মকর্তা থাকবেন। বর্তমানে দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যসীমা নির্ধারণ করা রয়েছে ১০ লাখ ১৩ হাজার ৬২৮ জন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে এই সংখ্যা ৯ লাখের কাছাকাছি বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

ওই ডিক্রিতে সেনাবাহিনীর জন্য তহবিলের বিষয়টি রাষ্ট্রীয় বাজেট থেকে নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে। তবে সেনাসংখ্যা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে নাকি পদ বাড়ানো হবে, তা স্পষ্ট নয়।

বর্তমানে ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী রুশ পুরুষদের সেনাবাহিনীতে ডাকা হয়। অনেকেই এক বছর মেয়াদি এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণকে নানাভাবে এড়িয়ে যান। রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধে যেতে সেনাসদস্যদের বাধ্য করার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়ে থাকে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে যেতে বাধ্য করা ও কিছু ক্ষেত্রে রুশ সেনাদের বন্দী হওয়ার ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।