ইউক্রেনীয় হামলা রুখতে দুর্গ গড়ছে রাশিয়া
ইউক্রেনীয় বাহিনীর বড় ধরনের হামলা ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই রুশ বাহিনী কঠিন দুর্গ তৈরি করছে।
ট্যাংক যাতে সামনে এগোতে না পারে, সে জন্য ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খাদ কেটে রাখা হয়েছে। এর পেছনে তৈরি করা হয়েছে কংক্রিটের ব্যারিকেড। আরও পেছনে তৈরি করা হয়েছে রক্ষণাত্মক পরিখা। এসবই মূলত আক্রমণ ঠেকানোর প্রস্তুতি। ইউক্রেনে রুশ সেনাদের দখল করা পোলোহি শহরের ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রুশ বাহিনীর এমন প্রস্তুতি চোখে পড়েছে। ইউক্রেনীয় বাহিনীর বড় ধরনের হামলা ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই রুশ বাহিনী এমন কঠিন দুর্গ তৈরি করছে। এদিকে রুশ বাহিনীর ওপর ব্যাপক হামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে কিয়েভের বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা ক্যাপেলা স্পেসের কৃত্রিম উপগ্রহে তোলা ছবিতে রুশ বাহিনীর প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির বিষয়টি উঠে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, পশ্চিম রাশিয়া থেকে পূর্ব ইউক্রেন হয়ে ক্রিমিয়া পর্যন্ত রাশিয়ান দুর্গের বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে হাজারো সেনা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে সাফল্য পেতে চায় কিয়েভের বাহিনী। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের সেনারা প্রস্তুত হয়ে গেলেই রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে হাজারো প্রতিরক্ষা অবস্থানসংক্রান্ত কৃত্রিম উপগ্রহের ছবি পর্যালোচনা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, দক্ষিণ জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল ও ক্রিমিয়ায় প্রবেশপথের এলাকাগুলোতে প্রতিরক্ষা জোরদার করা হয়েছে।
ছয়জন সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, শরতে ইউক্রেনের দ্রুত হামলার জবাব দিতেই এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে এবার ইউক্রেনীয় বাহিনীর সামনে এগোনো কঠিন হবে। এ ছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে জটিল আক্রমণ ও কার্যকরভাবে যৌথ অপারেশন চালানো বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক নেইল মেলভিন বলেন, ইউক্রেনীয়দের মতো যুদ্ধ পরিচালনা রুশ সেনারা করতে পারবেন না, তা তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই তাঁরা পুরোনো সোভিয়েত আমলের পদ্ধতিতে ফিরে গেছেন।
ইউক্রেনীয় বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পাল্টে যেতে পারে। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলার পর থেকে বর্তমানে যুদ্ধের গতি অনেকটাই কমে এসেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলা বাড়লে রুশ প্রতিরক্ষা দীর্ঘায়িত হতে পারে। কিয়েভ যদি দক্ষিণাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, তাহলে কৃষ্ণসাগরের সমুদ্রপথে তারা বাধাহীন রপ্তানি চালু রাখতে পারবে। কারণ, রাশিয়া ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এদিকে কিছু কিছু অঞ্চলে এখনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। গতকাল মাইকোলাইভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
কিয়েভকে দেড় হাজার সাঁজোয়া যান দিল ন্যাটো
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, কিয়েভকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্রদের পক্ষ থেকে সামরিক ইউনিট গঠনের জন্য ১ হাজার ৫৫০টি সাঁজোয়া যান ও ২৩০টি ট্যাংক সরবরাহ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ এ তথ্য জানান।