ঋতুস্রাবকালে নারী কর্মীদের ছুটি দিতে স্পেনে আইন পাস
ঋতুস্রাব চলাকালীন যেসব নারী কর্মী গুরুতর অসুস্থতায় ভোগেন, তাঁদের সবেতন ছুটি দিতে আইন পাস করেছে স্পেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে এ আইন পাস হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে নারী কর্মীদের ঋতুস্রাব চলাকালীন ছুটি দিতে আইন করল স্পেন।
স্পেনে এখন বামপন্থী সরকার ক্ষমতায়। নারী কর্মীদের ঋতুস্রাবকালে অসুস্থতায় ভোগার বিষয়টিকে যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে এ–সংক্রান্ত একটি বিল বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়। বিলের পক্ষে ভোট দেন ১৮৫ জন আইনপ্রণেতা, আর বিপক্ষে ভোট দেন ১৫৪ জন।
বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশে নারী কর্মীদের ঋতুস্রাবকালে ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে। এবার জাপান, ইন্দোনেশিয়া ও জাম্বিয়ার সঙ্গে এ তালিকায় নাম উঠল স্পেনের।
স্পেনে সমতার বিষয়টি দেখভালের জন্য একটি মন্ত্রণালয় আছে। সেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এখন ইরিন মন্টেরো। পার্লামেন্টে বিলটি পাস হওয়ার পর টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘নারীবাদের অগ্রগতির জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক দিন।’ একই সঙ্গে এতে ‘নিষিদ্ধ বিষয়’ হয়ে থাকা ঋতুস্রাবের বিষয়টি প্রকাশে বাধা কেটে যাবে।
গত বছরের মে মাসে স্পেনের মন্ত্রিসভা এই আইন প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দিয়েছিল। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর মন্ত্রী ইরিন মন্টেরো তখন বলেছিলেন, ‘ঋতুস্রাব আর কোনো “নিষিদ্ধ বিষয়” নয়। ঋতুস্রাবকালে ব্যথা নিয়ে কাউকে আর অফিসে যেতে হবে না। এ জন্য ওষুধ সেবন বা বিষয়টি গোপন করতে হবে না।’
নতুন আইনে বলা হয়েছে, যেসব নারী কর্মী ঋতুস্রাবের সময় খুব ব্যথা বা অসুস্থতায় ভোগেন, তাঁরা যত দিন প্রয়োজন ছুটি নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে নিয়োগকারী অর্থাৎ একজন নারী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেই প্রতিষ্ঠান তাঁর ঋতুস্রাবকালীন ছুটি সাধারণ অসুস্থতাজনিত ছুটি হিসেবে হিসাব করতে পারবে না।
তবে শারীরিক অসুস্থতাজনিত অন্য কোনো কারণে ছুটি এর আওতায় পড়বে না। এসব ক্ষেত্রে ছুটি নিতে চাইলে কর্মীদের চিকিৎসকের পরামর্শপত্র (প্রেসক্রিপশন) দেখাতে হবে। তবে প্রতিবছর একজন কর্মী শারীরিক অসুস্থতার কারণে কত দিন ছুটি পাবেন, সে বিষয়ে অবশ্য নতুন এই আইনে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
স্পেনের গাইনোকোলজি অ্যান্ড অবস্টেট্রিকস সোসাইটির হিসাবে, ঋতুস্রাবের সময় দেশটির নারীদের তিন ভাগের এক ভাগ প্রচণ্ড ব্যথাজনিত অসুস্থতায় ভোগেন।