ইউক্রেনে ২০১৪ সালে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় দায়ী রাশিয়া: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইসিএও) সোমবার জানিয়েছে, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের যাত্রীবাহী ফ্লাইট এমএইচ-১৭ ভূপাতিত করার ঘটনায় রাশিয়া দায়ী। ওই ঘটনায় ২৯৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
মন্ট্রিলভিত্তিক সংস্থাটি জানায়, ওই বছরের ১৭ জুলাই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ফ্লাইট এমএইচ-১৭ ভূপাতিত করার ঘটনায় অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডস যে অভিযোগ এনেছে, তা ‘তথ্য ও আইনের দিক থেকে যথার্থ’।
গতকাল সোমবার আইসিএওর দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করার ঘটনার মাধ্যমে রাশিয়া আন্তর্জাতিক বিমান আইনের আওতায় নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
আইসিএও আরও বলেছে, সংস্থাটির কাউন্সিল প্রথমবারের মতো সদস্যরাষ্ট্রগুলোর বিরোধ যাচাই করে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত জানাল।
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর যাচ্ছিল বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ। পথে দোনেৎস্কে এটি বিধ্বস্ত হয়। সে সময় ওই অঞ্চলে রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইউক্রেনের বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত ছিলেন।
রুশনির্মিত একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উড়োজাহাজটি ভূপাতিত হয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ ছিলেন ডাচ্ নাগরিক, ৩৮ জন ছিলেন অস্ট্রেলীয় ও ৩০ জনের মতো মালয়েশিয়ার নাগরিক। এর মধ্যে অনেকেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। তৎকালীন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি, উড়োজাহাজটিকে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, এর জন্য দায়ী ইউক্রেন।
তবে ওই ঘটনার পরদিন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, উড়োজাহাজটিকে যেখান থেকে গুলি করা হয়েছিল, তা ছিল রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা। তিনি জানান, রাশিয়ার সহায়তা ছাড়া তারা এটিকে ভূপাতিত করতে পারত না।
২০২২ সালে একটি ডাচ্ আদালত এ ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন রুশ নাগরিক। তবে রাশিয়া তাঁদের হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
রাশিয়া বরাবরই এমএইচ-১৭ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছে।
গতকাল রাতে আইসিএওর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডস সরকার।