স্নায়ুযুদ্ধকালের বাংকার উন্মুক্ত করল ডেনমার্ক

এই বাংকার তৈরি হয় ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে
ছবি: এএফপি

ডেনমার্কের উত্তরাঞ্চলের রোল্ড ফরেস্ট এলাকায় তৈরি করা হয়েছিল অত্যন্ত গোপনীয় একটি বাংকার। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পীড়াপীড়িতে দেশটি ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে ওই বাংকার গড়ে তোলে।

এটি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল, পারমাণবিক হামলা হলে তা থেকে সরকারকে সুরক্ষা দেওয়া। সম্প্রতি বাংকারটি জনগণের দেখার জন্য খুলে দিয়েছে ডেনমার্ক সরকার। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, এটি স্নায়ুযুদ্ধকালীন দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দেবে।

ভূগর্ভস্থ ওই বাংকারের তথ্য এত দিন গোপন রাখা হয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ইউরোপে পারমাণবিক সংঘর্ষের আশঙ্কার মধ্যেও পুরোনো বাংকারটি জাদুঘরে রূপ দিয়েছে দেশটির সরকার। তবে বাংকারটির সবকিছুই আগের মতো রাখা হয়েছে। গত সোমবার এটি জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ডেনমার্ক সরকার বলছে, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা ও কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র-সংকটকে কেন্দ্র করে এই বাংকার তৈরি করা হয়। এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘রেগান ওয়েস্ট’। পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হলে ডেনমার্কের সরকার ও রাজাকে ওই বাংকারে রাখার পরিকল্পনা ছিল। গাছপালার ভেতরে একটি পাহাড়ের ২০০ ফুট নিচে এর অবস্থান।

জাদুঘরের পরিচালক লার্স ক্রিশ্চিয়ান নরব্যাক বলেন, একে ডেনমার্কে গণতন্ত্রের শেষ ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। কোপেনহেগেন থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের এই বাংকারে ডেনমার্কের কর্তৃপক্ষ এক মাস থাকতে পারত। তবে এটি কখনো ব্যবহার করা হয়নি। ২০০৩ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই বাংকার আর ব্যবহার করা হবে না। ২০১২ সালে বাংকারবিষয়ক তথ্য জনসমক্ষে আসে।

বাংকারের মধ্যে শোবার জায়গা, ক্যাফেটেরিয়া, সরকারি সম্মেলনকেন্দ্র ছাড়াও ষাটের দশকের নানা সাজসজ্জা দেখতে পাওয়া যায়। নরব্যাক আরও বলেন, এটি কাগজ, পেনসিলের একটি টাইম ক্যাপসুল (ঐতিহাসিক তথ্য ধরে রাখার স্থান), যা আগের মতোই রয়ে গেছে।

বাংকার বিষয়ে ঐতিহাসিক বডিল ফ্রান্ডসেন বলেন, তরুণ প্রজন্মের কাছে দেখানোর ক্ষেত্রে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। স্নায়ুযুদ্ধের সময় মানুষ আসলে কতটা উদ্বিগ্ন ছিল, তা এখান থেকে বুঝতে পারবে।