যুক্তরাজ্যে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক

আগামী সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট, ২২ মে, ২০২৪ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকারের মেয়াদের অন্তত ছয় মাস আগে আগাম জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বুধবার সারা দিন ওয়েস্টমিনস্টার ঘিরে নানা গুজবমুখর দিন পার করার পর বিকেলে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে আগামী ৪ জুলাই জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে রীতিমতো অবাক করে দিয়েছেন ঋষি সুনাক। ২ মে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর লেবার পার্টি সরকারের প্রতি আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল।

জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণায় ঋষি সুনাক বলেন, ব্রিটেনের ভিত্তিকে আরও বেশি নিরাপদ ও ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনি কাকে এবং কীভাবে বিশ্বাস করবেন?
স্থানীয় নির্বাচনে অভূতপূর্ব ফল অর্জন করে ফুরফুরে মেজাজে থাকা বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার আগাম জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণায় বলেন, নির্বাচন হলো ভালোর জন্য পরিবর্তনের সুযোগ এবং এই নির্বাচনের জন্য দেশ অপেক্ষা করছে। আগামী দিনে ধৈর্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে যুক্তরাজ্য অনেক গর্ব ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার এসএনপির নেতা জন সুনে আগাম জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটাই সুযোগ কনজারভেটিভ পার্টিকে বিদায় করে স্কটল্যান্ড ফার্স্টকে সামনে আনার।

নির্বাচনের আগাম ঘোষণার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আলবেনিয়ায় সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন।

এদিকে আগাম জাতীয় নির্বাচন ঘোষিত হওয়ায় যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সব ব্যস্ততা স্থগিত ঘোষণা করেছে বাকিংহাম প্যালেস। যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচরণায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।

ইউরোপ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া (ব্রেক্সিট), করোনা মহামারি, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও সর্বশেষ গাজা পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাজ্যের রাজনীতি ও অর্থনীতি বেশ টালমাটাল। ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি ২০১০ সাল থেকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে, কিন্তু নেতৃত্বে টেকসই নয়। গত ১৫ বছরে দলটি অন্তত পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তন এনেছে। কিন্তু অর্থনীতিতে তেমন পরিবর্তন আসেনি।

মুদ্রাস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি মূল্য ও সুদহার বেড়েছে কয়েক গুণ। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আকাশচুম্বী। এমতাবস্থায় ২ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবি হয় ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির।