পশ্চিমা বিশ্বকে ‘মিথ্যার সাম্রাজ্য’ বললেন লাভরভ

জাতিসংঘের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ
ছবি: রয়টার্স

পশ্চিমা বিশ্বকে ‘মিথ্যার সাম্রাজ্য’ বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা নানা দ্বন্দ্বকে উসকে দিচ্ছে। এটা কৃত্রিমভাবে মানবতাকে বিভক্ত করছে। হিংসা বাড়াচ্ছে। আর এর ফলে সার্বিক অর্জনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

গতকাল শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে লাভরভ এসব কথা বলেন।

লাভরভ বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব তাদের নিজস্ব নিয়মকানুন মেনে চলতে সারা বিশ্বকে জোরজবরদস্তি করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেমনটা বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব এখন সত্যিকার অর্থেই ‘মিথ্যের সাম্রাজ্য।’

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলোর বর্তমান রুশনীতির বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে লাভরভ বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকেরা রাশিয়াকে যেকোনো মূল্যে কৌশলগতভাবে হারানোর মোহে অন্ধ হয়ে গেছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা মূলত তাঁদের নিজেদের দেশকেই বিপদে ফেলছেন।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর দফায় দফায় সামরিক মহড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন লাভরভ। তিনি বলেছেন, ন্যাটো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য পরমাণু অস্ত্রের মহড়াও চালিয়েছে। তিনি আরও জানান, স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউরোপে এমন মহড়া নজিরবিহীন।

আধুনিক পশ্চিমা দেশগুলো আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমতার নীতিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করছে মন্তব্য করেন লাভরভ। তিনি বলেন, এই অবস্থান যেকোনো আলোচনায় পশ্চিমা বিশ্বের অনমনীয়তাকেই তুলে ধরে। ইউরোপীয় ও মার্কিনরা বাকি বিশ্বের দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকাতে অভ্যস্ত। তারা বিশ্বকে আগে-পরে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ও দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতি শেষ পর্যন্ত প্রতিজ্ঞাভঙ্গে রূপ নেয়।

এবার জাতিসংঘের অধিবেশনে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে ১০ দফা প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া জাতিসংঘ কৃষ্ণসাগর দিয়ে আবারও শস্য রপ্তানি চালুর প্রস্তাব দিয়েছে।

জাতিসংঘের অধিবেশনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ কিয়েভের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। এটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এটা বাস্তবসম্মত নয়। আর এটা সবাই বোঝে। আর এখন তারা (ইউক্রেন) বলছে, আলোচনার জন্য এটা মূল ভিত্তি।

আর জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়ে লাভরভের বক্তব্য, এটা মোটেও কার্যকর নয়। কারণ, পশ্চিমারা এর আগে মস্কোকে দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতি রাখেনি।