দাঙ্গা থামাতে ফ্রান্সের এক শহরে কারফিউ

বিক্ষোভকারীরা একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর তা নেভানোর চেষ্টায় অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা
ছবি: এএফপি

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের শহরতলির একটি তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত হওয়ার জেরে সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছু এলাকায় কারফিউ জারি ও যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দাঙ্গা ঠেকাতে ২৯ জুলাই থেকে আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত প্যারিসের পার্শ্ববর্তী ক্লামার্ত শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। প্যারিস অঞ্চলে রাত নয়টা থেকে বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ফ্রান্সের ইল-দে-ফ্রান্স অঞ্চলের প্যারিসের ঠিক দক্ষিণের ক্লামার্ত শহরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৯ জুলাই থেকে ৩ জুলাই প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।

গত মঙ্গলবার প্যারিসের শহরতলি নতেঁর একটি তল্লাশিচৌকিতে উত্তর আফ্রিকান বংশোদ্ভূত নাহেল নামের ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নির্দেশনা না মেনে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই কিশোরকে গুলি করা হয়।

আরও পড়ুন

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের দুই কর্মকর্তা গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের একজন গাড়ির জানালা দিয়ে চালকের দিকে অস্ত্র তাক করেন। চালক গাড়ি চালানো শুরু করলে খুব কাছ থেকে গুলি করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। কয়েক মিটার দূরে গিয়ে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বার্তা সংস্থা এএফপি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে।

ওই ঘটনায় দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে ক্লামার্ত শহরের কর্তৃপক্ষ টুইটারে জানিয়েছে।

এদিকে, পরিবহন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাস ও রেল পরিষেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্যারিস অঞ্চলের প্রধান ভ্যালেরি পেক্রেসে। আকস্মিক এই ঘোষণার কারণে রাজধানী ও এর উপকণ্ঠের হাজারো যাত্রী নিশ্চিতভাবে বিপাকে পড়বেন।

এক টুইটে ভ্যালেরি বলেন, ‘আমাদের পরিবহন গুন্ডা ও ভাঙচুরকারীদের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।’

আরও পড়ুন

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর ফ্রান্সের ট্রাফিক তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে এ নিয়ে দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। গত বছর এ ধরনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা ছিল ১৩।

পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর নেহালের এক প্রতিবেশীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তার পরিবার এসেছে আলজেরিয়া থেকে।

বার্তা সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে যত মানুষ নিহত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ অথবা আরব বংশোদ্ভূত।

আরও পড়ুন