শামীমাকে পাচারে গোয়েন্দা সম্পৃক্ততা তদন্ত করা হবে: ট্রুডো
‘আইএস–বধূখ্যাত’ শামীমা বেগমসহ যুক্তরাজ্যের তিন স্কুলছাত্রীকে ২০১৫ সালে সিরিয়ায় পাচারে কানাডার গোয়েন্দাদের জড়িত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে দেশটি। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির
ব্রিটেনের এই সরকারি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে আসে, দুই বান্ধবীকে নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় যাওয়া শামীমা কানাডার এক গুপ্তচরের পাচারের শিকার হয়েছিলেন।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে তিনি অভিযোগগুলো ‘খতিয়ে দেখবেন’। তবে তিনি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন। তাঁর ভাষায়, ‘একটি খুবই বিপজ্জনক বিশ্বে’ গোয়েন্দারা কানাডাকে নিরাপদ রেখেছেন।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও সৃজনশীল হতে হয়।’
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘কিন্তু এ কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা অধিকার, স্বাধীনতা সনদসহ নীতি ও মূল্যবোধভিত্তিক কঠোর আইন মেনে চলতে বাধ্য, যা কানাডীয়দের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি, (এ ক্ষেত্রেও) সেসব আইন মেনে চলা হয়েছে।’
প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রুডো বলেন, ‘আমি জানি, বিগত সময়ের কিছু ঘটনা ও অভিযান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমরা সেটি খতিয়ে দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করব।’
শামীমা বর্তমানে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার একটি বন্দীশিবিরে আটক রয়েছেন। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতনের পর সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে শামীমার খোঁজ মিলে। তখন শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় যুক্তরাজ্য।
শামীমার পরিবারের আইনজীবী তাসনিম আকুনজি তাঁর যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুনানিতে ‘মূল যুক্তিতর্কের একটি’ হবে—শামীমা যে মানব পাচারের শিকার, সে বিষয়টি বিবেচনায় নেননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শামীমাকে আইএসের হয়ে লড়তে সিরিয়ায় পাঠিয়েছিলেন কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করা এক ব্যক্তি। তাঁর নাম মোহাম্মদ আল রশিদ। তিনি কানাডীয় গোয়েন্দাদের তথ্য সরবরাহ করতেন।
২০১৫ সালে শামীমা যখন যুক্তরাজ্য থেকে জঙ্গি সংগঠন আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যান, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও দুজন। তাঁরা হলেন খাদিজা সুলতানা (১৬) ও আমিরা আব্বাসি (১৫)।
বিবিসির হাতে আসা গোয়েন্দা নথির তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কের ইস্তাম্বুলের প্রধান বাসস্টেশনে এই তিন কিশোরী রশিদের সঙ্গে দেখা করেন। রশিদই তাঁদের আইএস–নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ায় নিয়ে যান। পরে সেই তথ্য জর্ডানে কানাডার দূতাবাসে পাঠিয়ে দেন তিনি।