যুদ্ধক্ষেত্রে চাপের মুখে রাশিয়া

রাশিয়ার বেলগোরোদ শহরের একটি গাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে গাড়িটিছবি: এএফপি

আকাশপথে রাশিয়ার লাগাতার হামলার জবাবে ইউক্রেনও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ইউক্রেন সাধারণত এমন বিচ্ছিন্ন ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করছে না। আবার রাশিয়াও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট নয়।

 এবার রাশিয়ার দক্ষিণে ভোরোনেঝ শহরে ড্রোন হামলার কারণে শহরের মেয়র জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সেই হামলায় কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি শিশু আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আগুনের কারণে একটি আবাসিক ভবন থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার রাতে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ভোরোনেঝ অঞ্চলে পাঁচটি ড্রোন ধ্বংস ও তিনটি প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে বেলগোরোদ অঞ্চলেও চারটি ড্রোন হামলা নস্যাৎ করা হয়েছে।

 উল্লেখ্য, রুশ সংবাদমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী ভোরোনেঝ শহরের কাছাকাছি রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটি রয়েছে। ইউক্রেনে হামলা চালাতে সেখান থেকে সুখোই এসইউ-৩৪ যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়। সোমবার রাতে সে এলাকায় কমপক্ষে ১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে কিছু রুশ সূত্র টেলিগ্রাম চ্যানেলে দাবি করছে।

 গত কয়েক দিনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী বেশ ক্ষয়ক্ষতির মুখ দেখেছে। আজভ সাগরের ওপর দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ড বিমান ধ্বংস হওয়ার ঘটনা নিয়ে অবশ্য বিভ্রান্তি এখনো কাটছে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ৩০ কোটি ডলার মূল্যের রাডারযুক্ত এ-৫০ বিমান এবং আইআই-২২ কমান্ড বিমান হারানো রুশ বিমানবাহিনীর জন্য মারাত্মক ঘটনা। ইউক্রেন সেই সাফল্য দাবি করলেও প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে সংশয় থেকে যাচ্ছে।

 র‌্যান্ড করপোরেশনের বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম কার্টনি ডয়চেভেলেকে বলেন, রাশিয়ার হাতে সম্ভবত ৬টি এ-৫০ বিমান ছিল। বিশেষ করে ইউক্রেন মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করলে সেই বিমানের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে রাশিয়াকে এ-৫০-এর ওপর নির্ভর করতে হবে। আইআই-২২ কমান্ড বিমানও সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাঁর সুইজারল্যান্ড সফরে সুইস সরকারের শীর্ষ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোমবার আলোচনা করেছেন। দুই দেশ যৌথভাবে ইউক্রেন শান্তি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সম্মেলনের দিনক্ষণ এখনো স্থির হয়নি।

 জেলেনস্কি সেখানে রাশিয়ার উপস্থিতির কোনো কারণ দেখছেন না। মঙ্গলবার তিনি দাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে প্রথমবার সশরীর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। গত কয়েক বছরে তিনি ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছিলেন। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আরও সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা আদায় করতে তিনি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জগতের শীর্ষ নেতাদের কাছে আবেদন করবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন