রাশিয়ায় ব্যাপক ড্রোন হামলা ইউক্রেনের, ১৪২টি ভূপাতিত করার দাবি মস্কোর
ইউক্রেনের ১৪২টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে রাশিয়া। গতকাল শনিবার রাতে ও আজ রোববার সকালে রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ড্রোনগুলো ছোড়া হয়েছিল। ড্রোনগুলোর মধ্যে ২৭টি ধ্বংস করা হয়েছে মস্কো অঞ্চলে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাজধানী মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবইয়ানিন আজ বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে এ তথ্য জানিয়েছেন। সে অনুযায়ী রাশিয়ার ইউরোপীয় অংশ, কৃষ্ণসাগর এলাকাসহ দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে এসব ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
রাশিয়ার বেসরকারি উড়োজাহাজ চলাচল নজরদারি করা প্রতিষ্ঠান রোবাভিয়াস্তিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ড্রোন হামলার ফলে মস্কোর চারটি বিমানবন্দর-শেরেমেতইয়েভো, ভনুকোভো, দোমোদেদোভো ও জুকোভস্কিতে সেবা বিঘ্নিত হয়। এই বিমানবন্দরগুলো থেকে ১৩৪টি ফ্লাইট ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আজ মস্কোর সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত ভনুকোভো ও গ্রাবৎসেভো বিমানবন্দর বন্ধ ছিল।
এদিকে যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে শনিবার রাশিয়াকে আবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এদিনই তিনি জানান, শুক্রবার রাতভর ইউক্রেনের ১০টি অঞ্চলে হামলা চালায় রাশিয়া। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় ৩৪০টির বেশি বিস্ফোরক এবং ৩৫টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রুশ বাহিনী।
শনিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য সবকিছু করতে হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে চলা থেকে রাশিয়াকে বিরত থাকতে হবে। আগামী সপ্তাহে আবার শান্তি আলোচনায় বসার জন্য মস্কোকে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন ইউক্রেনের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তম উমেরভ। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি জেলেনস্কি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে দুই পক্ষেরই বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৎপরতায় বিগত পাঁচ মাসে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে দুই দফা আলোচনায় বসেছে মস্কো ও কিয়েভ। এ আলোচনায় বন্দিবিনিময়ের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের প্রস্তাবের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘ইউক্রেন নিয়ে মীমাংসার বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার জন্য নিজের আগ্রহের কথা বারবার জানিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, এতটাও সহজ নয়। আর প্রধান বিষয়টি হলো আমাদের লক্ষ্য অর্জন। এই লক্ষ্যগুলো পরিষ্কার।’