নাভালনির স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ রাশিয়ার আদালতের
রাশিয়ার সরকারবিরোধী প্রয়াত নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়াকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। একটি ‘চরমপন্থী সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে মস্কোর একটি আদালত গতকাল মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেন।
ইউলিয়া বর্তমানে রাশিয়ার বাইরে আছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতেই আদালত তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। এর অর্থ, রাশিয়ার মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে ইউলিয়াকে গ্রেপ্তার করা হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের কারা কলোনিতে মারা যান অ্যালেক্সি নাভালনি। বন্দীদের ওপর নিষ্ঠুরতার জন্য কারাগারটি কুখ্যাত।
সাধারণত প্রচারের আলোর বাইরে থাকতে পছন্দ করা ইউলিয়া কারাগারে স্বামীর মৃত্যুর পর বিচারের দাবিতে সরব হন। ইউলিয়ার বয়স এখন ৪৭ বছর। অ্যালেক্সির মৃত্যুর পর ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে স্বামীর লড়াই চালিয়ে নেওয়ার এবং ‘ভবিষ্যতে সুন্দর এক রাশিয়া গড়ার’ যে স্বপ্ন তাঁর স্বামী দেখেছিলেন, তা পূরণে কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইউলিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের সমর্থকদের বার্তা দেন ইউলিয়া। সেখানে তিনি সমর্থকদের শুধু তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া আদালতের নির্দেশের দিকে মনোযোগ না দিয়ে বরং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে লড়াইতেও মনোযোগ দিতে বলেছেন।
ইউলিয়া লেখেন, ‘যখন আপনি এটা নিয়ে লিখবেন, দয়া করে মূল বিষয়টি নিয়েও লিখতে ভুলবেন না—ভ্লাদিমির পুতিন একজন খুনি এবং একজন যুদ্ধাপরাধী।
‘তাঁর জায়গা কারাগারে এবং সেটা হেগের কোথাও আরামদায়ক কোনো কারাকক্ষে টিভি দেখতে দেখতে নয়, বরং রাশিয়ায়—ঠিক ওই কারা কলোনিতে, দুই বাই তিন মিটারের ওই কারাকক্ষে, যেখানে তিনি অ্যালেক্সিকে হত্যা করেছেন।’
গত ফেব্রুয়ারি মাসে হঠাৎ কারাবন্দী অবস্থায় অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর খবর আসে। কারাগার থেকে দেওয়া সনদে তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ার কথা বলা হলেও ইউলিয়ার দাবি, পুতিনের নির্দেশে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। গত মার্চে স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নিতে পারেননি।
ক্রেমলিন থেকে অ্যালেক্সিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
স্বামীর মৃত্যুর পর ইউলিয়া বেশ কয়েকজন পশ্চিমা প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন, যাঁদের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও রয়েছেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন ইউলিয়াকে তাদের প্রধান করে। ইউলিয়া বলেছেন, তিনি তাঁর এই নতুন ভূমিকাকে ব্যবহার করে পুতিনের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীর লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
এক্সে এক পোস্টে তখন ইউলিয়া বলেছিলেন, ‘পুতিনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, ভবিষ্যতের সুন্দর রাশিয়ার জন্য লড়াই করতে যা কিছু কার্যকর হতে পারে, তার সবই আমি করে যাব।’