ইউরোপে ডানপন্থীদের সমর্থন দিয়ে উসকে দিচ্ছেন মাস্ক
যুক্তরাজ্যে নতুন করে নির্বাচন চেয়েছেন, জার্মানির উগ্র ডানপন্থীদের সমর্থন দিয়েছেন, ইউরোপিয়ান কমিশনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন। এগুলো সবে শুরু। তার প্রভাব আরও বহুদূর ছাড়িয়ে যাবে। বলা হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী, প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, মার্কিন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্কের কথা। তিনি এখন ইউরোপে কট্টর ডানপন্থীদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। কারণ, ইউরোপে প্রগতিশীলেরা এখনো তাঁকে কীভাবে গ্রহণ করবেন, তা ঠিক করে উঠতে পারেননি।
বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক তিনি। এর বাইরে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা ও মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সেরও উদ্যোক্তা তিনি। এর বাইরে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি (ইনফ্লুয়েন্সার) হিসেবে তাঁর ভূমিকার কথা এখন সবার জানা। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে তাঁর প্রভাবের বিষয়টি গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি দেখিয়েছেন। এখন আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠা মাস্কের নজর ইউরোপের দিকে। কারণ, ইউরোপের দেশগুলোর অধিকাংশ সরকার ডানপন্থী ও জনতুষ্টিবাদী নেতাদের উত্থান ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে।
সম্প্রতি ইলন মাস্ক টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, স্টারমারকে (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী) অবশ্যই সরতে হবে এবং দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য গণ–অপরাধে জড়িত থাকার জন্য তাঁকে অবশ্যই অভিযোগের মুখোমুখি হতে হবে।
ইলন মাস্ক যুক্তরাজ্যের কট্টরপন্থী আন্দোলনকারী টমি রবিনসনের কারামুক্তির আহ্বান জানান। এ ছাড়া তিনি দেশটির অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে পার্টিকে সমর্থন দেন। তিনি দলটির নেতা নাইজেল ফারাজের সঙ্গে সম্প্রতি সাক্ষাৎ করেছেন।
অবশ্য যুক্তরাজ্যই শুধু ইলন মাস্কের লক্ষ্যবস্তু নয়। তিনি গত মাসে হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্তর অরবানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে জার্মানি সরকারের বিষয়েও নাক গলানোর অভিযোগ উঠেছে। জার্মানির নির্বাচনের আগে তিনি দেশটির কট্টর ডানপন্থী দল এএফডিকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। এর বাইরে তিনি ইতালির ডানপন্থী নেতা জর্জিয়া মেলোনির সমর্থক। মেলোনির পক্ষ থেকে ইলন মাস্ককে ‘মেধাবী’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, ইলন মাস্কের রাজনৈতিক এসব উদ্যোগের পেছনে অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত। টরন্টোর ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইলান কাপুরের মতে, মাস্ক ও ট্রাম্পের জন্য গণতন্ত্র, বিতর্ক, মতবিরোধ, রাষ্ট্রীয় কল্যাণব্যবস্থা সবই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।