অস্ত্রের অভাবে ক্ষোভ উগরে দিলেন জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে কোণঠাসা ইউক্রেন আত্মরক্ষার জন্য যথেষ্ট অস্ত্র ও গোলাবারুদের অভাবে অসহায় বোধ করছে। বিশেষ করে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরে রাশিয়ার আক্রমণ বেড়ে চলেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সেখানে গেছেন।

জার্মানির বিল্ড ও অন্যান্য কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পশ্চিমা জগতের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সামরিক সহায়তার অভাব সম্পর্কে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সহযোগী দেশগুলোর কাছে এমন কিছু অস্ত্র আছে, যা ইউক্রেনের অস্তিত্বের খাতিরে এখনই প্রয়োজন। কেন সেই অস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না, তা তিনি বুঝতে পারছেন ন। বিশেষ করে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও গোলাবারুদের অভাব সম্পর্কে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ প্রসঙ্গে জার্মানির কাছ থেকে দূরপাল্লার টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন জেলেনস্কি। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বারবার সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। জার্মানির স্প্রিঙ্গার মিডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, সম্ভবত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের হুমকির কারণেই জার্মান চ্যান্সেলর শলৎজ সে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র ইউক্রেনকে দিতে ভয় পাচ্ছেন।

জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসে আটকে থাকা বিশাল অঙ্কের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দ্রুত অনুমোদনেরও আশা ছাড়ছেন না। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা তিনি গ্রহণও করেছেন। তবে এখনো সেই সফরের কোনো দিনক্ষণ স্থির করা হয়নি। জেলেনস্কি অবশ্য ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছেন। পশ্চিমা জগতের কাছ থেকে আধুনিক অস্ত্র পেলে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত করার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে জেলেনস্কি আবার এক সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছেন।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির উদ্দেশে সংসদের নিম্নকক্ষে ইউক্রেনের জন্য সহায়তার প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদনের অনুরোধ জানিয়েছেন। সোমবার তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজ করেন৷ ‘ব্যক্তিগত’ সেই সাক্ষাতের সময় তিনি ন্যাটোর ভবিষ্যৎ ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন৷ রিপাবলিকান পার্টির অন্য কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলোচনা করলেও সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার মাইক জনসনের সঙ্গে তিনি কথা বলার সুযোগ পাননি।

ডেভিড ক্যামেরন বলেন, আমেরিকার বন্ধু হিসেবে তিনি সে দেশের স্বার্থেই ইউক্রেনের জন্য সহায়তার আরজি জানাচ্ছেন। তাঁর মতে, পশ্চিমা জগৎ তাদের সহযোগীদের কতটা সহায়তা করছে, এই মুহূর্তে তা তেহরান, পিয়ংইয়ং ও বেইজিংয়ের মতো শহরে সবাই পর্যবেক্ষণ করছে। এই বেআইনি ও অপ্ররোচিত হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনকে যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে কি না, সেদিকে অন্যদেরও নজর থাকবে৷