বিরল ‘হাইব্রিড’ সূর্যগ্রহণ

বিরল মহাজাগতিক ‘হাইব্রিড’ সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ। গতকাল অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের এক্সমাউথ শহরে
ছবি: রয়টার্স

বিরল এক মহাজাগতিক দৃশ্য দেখতে গতকাল বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের এক্সমাউথ শহরে হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁরা ‘হাইব্রিড’ সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ দৃশ্য দেখতে হাজির হন মহাকাশপ্রেমী ও উৎসাহী লোকজন। অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী পার্থ থেকে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরের এ শহরের সমুদ্রসৈকতের পাড়ে মানুষের ভিড় জমে যায়।

গতকাল স্থানীয় সময় ১১টা ২৯ মিনিটে সূর্যকে অতিক্রম করে চাঁদ। এ সময় চাঁদের ছায়া পড়ে সূর্যের ওপর। সূর্যের চেয়ে চাঁদ আকারে ছোট হওয়ায় সূর্যের অংশবিশেষ ঢাকা পড়ে। দর্শকেরা এ সময় তাপমাত্রা কমতে ও অন্ধকার নেমে আসতে দেখেন।

গবেষকেরা বলেন, গতকাল যে সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে তা মূলত বিরল ‘হাইব্রিড’ ধরনের। ২০১৩ সালের পর এবারই প্রথম এক্সমাউথ শহর থেকে এ ধরনের গ্রহণ দেখা গেল।

হাইব্রিড ধরনের সূর্যগ্রহণের বিষয়টি নির্ভর করে, কোথায় দাঁড়িয়ে একজন সূর্যগ্রহণ দেখছেন, তার ওপর। কোথাও কোথাও সূর্যকে ঢেকে যেতে দেখেন দর্শক। তখন তিনি পূর্ণগ্রহণ হিসেবে এটি অবলোকন করেন আবার কেউ কেউ মাঝখানে চাঁদের ছায়া পড়তে ও পাশ দিয়ে আলো বের হতে হতে দেখেন, যা রিং অব লাইট নামে পরিচিত। কেউ কেউ আংশিক গ্রহণ দেখে থাকেন।

এই বিশেষ মুহূর্ত দেখতে পিটার বার্টলি তাঁর বাবা ও শিশুদের নিয়ে পার্থ থেকে ১৫ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে এক্সমাউথে আসেন। তিনি বলেন, ‘মাত্র এক মিনিটের এই দৃশ্যের জন্য ১৫ ঘণ্টার পথ পাড়ি দেওয়ার বিষয়টি প্রথমে কেউ পাত্তা দিতে চাইছিল না। কিন্তু যখনই তাদের বললাম যে এটা সবচেয়ে রোমাঞ্চকর একটি মিনিট হবে, যা দীর্ঘদিন পরপর ঘটে থাকে, তখন সবাই রাজি হয়।’

পূর্ণগ্রহণ কেবল অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তিমুর লেস্তের কিছু এলাকা থেকে দেখা গেছে। এ তিনটি দেশ ছাড়া আংশিক গ্রহণ দেখা গেছে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ থেকেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ছবিতে দেখা গেছে, জাকার্তার আকাশে আলো কমে গেছে। এদিকে জাপানের কিছু পর্যটক এক্সমাউথে গিয়ে এই সূর্যগ্রহণ উপভোগ করেন।