বার্লিন সফরেও চাপের মুখে নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রায় ১০ সপ্তাহ ধরে দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শেষ পর্যন্ত জার্মানির বার্লিন সফরে এলেন, যদিও তাতেও কিছুটা কাটছাঁট করতে হলো। ইসরায়েলি বুদ্ধিজীবীদের খোলাচিঠি সত্ত্বেও তাঁর জার্মানি সফর বাতিল করা হয়নি। নেতানিয়াহুর সফরের বিরুদ্ধে বার্লিনে কয়েক শ ইসরায়েলির জোরালো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণের কাছে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ‘ক্রাইম মিনিস্টার’ নামকরণ করে প্রতিবাদ জানান।

যাবতীয় সমালোচনা অগ্রাহ্য করে দেশের মতো বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়েও নেতানিয়াহু বিচার বিভাগের সংস্কারের বিতর্কিত পদক্ষেপের পক্ষে জোরালো সওয়াল করলেন। তাঁর মতে, এর ফলে ইসরায়েলের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল তো হবেই না, বরং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নেতানিয়াহুর দাবি, তিনি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর আদলে ইসরায়েলেও অবশেষে ক্ষমতাকেন্দ্রগুলোর মধ্যে ভারসাম্য আনছেন। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ‘অপবাদ এবং মিথ্যাচার’ ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের সঙ্গে আলোচনার পর নেতানিয়াহু অবশ্য কিছুটা সুর নরম করে বলেন, দেশে যা ঘটছে, তা মন দিয়ে লক্ষ করছেন তিনি। আলোচনার পর স্টাইনমায়ারের দপ্তর থেকে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।

জার্মান চ্যান্সেলর প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সরকারের এ বিতর্কিত পদক্ষেপ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন এবং নেতানিয়াহুর উদ্দেশে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার ডাক দেন। ‘ইসরায়েলের বন্ধু’ হিসেবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সে দেশের প্রেসিডেন্ট আইস্যাক হ্যারৎসগের আপস প্রস্তাব সম্পর্কে এখনো শেষ কথা বলা হয়নি।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলে প্রায় গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে সে দেশের প্রেসিডেন্ট তাঁর আনুষ্ঠানিক ভূমিকা সত্ত্বেও বুধবার সেই প্রস্তাব পেশ করেন। নেতানিয়াহু অবশ্য অবিলম্বে সেই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন।

বর্তমান ঘটনাবলি সত্ত্বেও ঐতিহাসিক কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে জার্মানির বিশেষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পরিবর্তন হবে না বলে জার্মান চ্যান্সেলর আশ্বাস দিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহুর উৎসাহ সত্ত্বেও শলৎজ দুই দেশের মন্ত্রিসভার যৌথ বৈঠকের রীতি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। এমনকি ভবিষ্যতে আবার কবে এমন বৈঠক বসবে, সে বিষয়েও কিছু বলেননি। ইসরায়েলের বর্তমান জোট সরকারের কিছু আলট্রা অর্থোডক্স ও চরম দক্ষিণপন্থী মন্ত্রীর সঙ্গে প্রকাশ্যে আলোচনার বিষয়ে জার্মানিসহ পশ্চিমা বিশ্বে প্রবল অস্বস্তি কাজ করছে। শলৎজ ও নেতানিয়াহু দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেছেন। জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করে যাবে এবং সে দেশ থেকে ‘অ্যারো ৩’ নামের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।