‘আইএস বধূ’ শামীমার আপিল খারিজ, ফিরতে পারছেন না যুক্তরাজ্যে

আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়া শামীমা বেগম
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সদস্যকে বিয়ে করতে কিশোর বয়সে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারানো শামীমার আপিল খারিজ করেছেন আদালত।

নিজের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে গত বছরের অক্টোবরে লন্ডনের আপিল আদালতে ওই মামলা করেন সাবেক ‘আইএস বধূ’ শামীমা বেগম (২৪)।

আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যের আপিল আদালত বলেছেন, আইনসিদ্ধভাবেই শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে।

আদালতের এই আদেশের অর্থ শামীমাকে সিরিয়ায় থাকতে হবে এবং তাঁর যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই।

আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, শামীমা বেগমের বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে এবং নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য তিনিই দায়ী– এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতে পারে।

‘কিন্তু এ বিষয়ে একমত হওয়া বা কোনো বিষয়েই ভিন্নমত দেখানো আদালতের কাজ নয়। আমাদের একমাত্র দেখার বিষয়, তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বেআইনি ছিল কি না। আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, তা বেআইনি ছিল না এবং আপিলটি খারিজ করা হল।’

শামীমার পরিবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি তাঁর স্কুলের দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ায় যেতে পূর্ব লন্ডনের বাসা ছাড়েন। পরে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন শামীমা। সেখানে তাঁর তিনটি সন্তান হয়। তবে সন্তানেরা কেউ বেঁচে নেই।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শামীমাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে পাওয়া যায়। এ সময় তিনি জানান, ওই সময়কার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে নেন। এতে তিনি (শামীমা) রাষ্ট্রহীন অবস্থায় পড়েছেন।

শামীমার পরিবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি তাঁর স্কুলের দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ায় যেতে পূর্ব লন্ডনের বাসা ছাড়েন। পরে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের এক যোদ্ধাকে বিয়ে করেন শামীমা। সেখানে তাঁর তিনটি সন্তান হয়। তবে সন্তানেরা কেউ বেঁচে নেই।

পরের বছর ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের একটি ট্রাইব্যুনাল তাঁর আদেশে বলেন, শামীমা রাষ্ট্রহীন অবস্থায় নেই। কেননা, তিনি ‘বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন নাগরিক’। তাঁর মা একজন বাংলাদেশি।

আরও পড়ুন

গত বছর শামীমা যুক্তরাজ্যের স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনে (এসআইএসি) ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হেরে যান। কমিশন বলেছে, শামীমাকে জঙ্গি সংগঠনটিতে নিয়োগ দিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে নিয়ে যাওয়া ও পরে যৌন নির্যাতনের জন্য সিরিয়ায় রেখে দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য সন্দেহ রয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিদ তাঁর নাগরিকত্ব কেড়ে না নিয়ে পারেননি।

এ আদেশের ফলে শামীমা বেগম সিরিয়ায় শরণার্থীশিবির থেকে যুক্তরাজ্যে নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেননি।

আরও পড়ুন

আইএসে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য থেকে প্রায় ৯০০ ব্যক্তি বিভিন্ন সময় সিরিয়া ও ইরাকে গেছেন। ব্রিটেনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে প্রায় দেড় শ ব্যক্তির নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন