অপহরণের একদিন পর বিরোধী নেতাকে আটকের কথা জানাল বেলারুশ

আটক হওয়া বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা
ছবি: রয়টার্স

অপহরণের শিকার হওয়ার এক দিন পর বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভাকে আটক করার দাবি করছে বেলারুশ। মঙ্গলবার তাঁকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে আটক করা হয়। সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনে যাওয়ার সময় তাঁকে আটক করা হয় বলে বেলারুশ কর্তৃপক্ষের দাবি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো রুশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মারিয়া কোলেসনিকোভা অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সময় আটক হয়েছে।’

এর আগে সোমবার মিনস্কের রাস্তা থেকে মারিয়া কোলেসনিকোভাকে জোর করে একটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

ওই দিন বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভার সঙ্গে এন্টন রোডেনকভ ও ইভান ক্রাভাস্তোভ নামে তাঁর দুই সহকর্মীও অপহরণের শিকার হন। তাঁরা দুজন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে চলে যেতে সক্ষম হয়েছেন। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দুজনের একজন এন্টন রোডেনকভ জানান, তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা আরও এক সহকর্মীকেও কোলেসনিকোভার সঙ্গে অপহরণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তাঁকে (কোলেসনিকোভাকে) জোর করে গাড়ির পেছনের আসনে বসানো হয়। তিনি তখন চিৎকার করে বলছিলেন যে তিনি কোথাও যাবেন না।’

সংবাদ সম্মেলনে এন্টন রোডেনকভ আরও জানান, তাঁদের সোমবার মিনস্কের রাস্তা থেকে একটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। অপহরণকারীদের মুখে মুখোশ পরা ছিল। গাড়িতে তুলে তাঁদের মাথার ওপর ‘হুডি’ পরিয়ে দেওয়া হয় এবং হাত বেঁধে দেওয়া হয়। গাড়ি বড় বড় দালানের মাঝ দিয়ে চলতে থাকে। অপহরণকারীরা তাঁদের গাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। তিনি বলেন, ‘অপহরণকারীরা আমাদের বেলারুশ ছাড়ার প্রস্তাব দেয়। আমরা প্রস্তাবে রাজি হই।’

কিন্তু তাদের গাড়ি সীমান্তের কাছে চলে আসলে কোলেসনিকোভা বেলারুশ ছাড়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তিনি কোথাও যাবেন না। একপর্যায়ে কোলেসনিকোভা তাঁর পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলেন।

বেলারুশ না ছাড়লে বিচারের মুখোমুখি করার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। অপহরণের শিকার হওয়া আরেকজন ইভান ক্রাভাস্তোভ বলেন, ‘তারা চাইছিল কোলেসনিকোভা যেন দেশ ছেড়ে চলে যান। অপহরণকারীরা বলেন কোলেসনিকোভার দেশ ছাড়া বেলারুশ পুনরায় সচল হওয়ার জন্য দরকার।’

বেলারুশে দেশজুড়ে চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভের অন্যতম তিন নারী সংগঠকদের একজন মারিয়া কোলেসনিকোভা। একমাত্র তিনিই বেলারুশে থেকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। বাকি দুজনকে বেলারুশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে আগেই। প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা স্ভেতলানা তিখানোভস্কায়া তাদের একজন। বর্তমানে তিনি লুথিয়ানায় অবস্থান করছেন। তাঁকে আগস্ট মাসে আটক করা হয়েছিল।