অভ্যুত্থানচেষ্টার দায়ে ২২ সাবেক তুর্কি সেনার যাবজ্জীবন

অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী
ফাইল ছবি রয়টার্স

তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার দায়ে আজ বুধবার ২২ সাবেক সেনাসদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের আইনজীবীদের একজন এই তথ্য জানিয়েছেন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীর একটি পক্ষ অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে। কিন্তু এরদোয়ানের সমর্থক ও সেনাবাহিনীর অপর পক্ষ সেই অভ্যুত্থান রুখে দেয়। ওই ঘটনায় ২৪৮ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে ২৪ জন ছিলেন অভ্যুত্থান চেষ্টাকারী। পরে সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটির বেশ কয়েক হাজার সেনাসদস্য ও বেসামরিক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।


অভ্যুত্থানচেষ্টায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গণবিচারের অংশ হিসেবে আঙ্কারার একটি আদালত ৪৯৭ জন সেনাসদস্যের ভূমিকা তদন্ত করেন। এর মধ্যে প্রেসিডেনশিয়াল গার্ডের বেশ কিছু সদস্যও ছিলেন। অভ্যুত্থানের অংশ হিসেবে সেনারা তুরস্কের প্রধান রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে অভিযান চালান এবং সামরিক জান্তার নেতাদের একটি বিবৃতি পাঠ করতে সংবাদপাঠককে বাধ্য করেন বলে তদন্ত উঠে আসে।


ওই বিচারের একটি নথি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের একজন আইনজীবী বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে পাঠিয়েছেন। নথিতে বলা হয়েছে, পদস্থ ২২ সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন টিআরটিতে অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠে বাধ্য করে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল উমিত গানসার রয়েছেন।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের রাতে সামরিক বাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার রেজিমেন্টের একটি সেনাদলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে সাবেক মেজর ফেদাকার আকসাকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

টিআরটি ভবন দখলের নির্দেশ দেওয়ার জন্য সাবেক কর্নেল মুহামেত তানজু পশরকেও একই সাজা দেওয়া হয়। আরেক সাবেক মেজর ওসমান কোলতারলাকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন বিচারক। অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় তিনি প্রেসিডেন্ট ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। তুরস্কে যাবজ্জীবন সর্বোচ্চ সাজা। ২০০৪ সালে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড বিলোপ করা হয়।

আঙ্কারা প্রদেশের সিনকন কারাগার ভবনে স্থাপন করা আদালতে ওই গণবিচারের রায় ঘোষণা করা হয়। অভ্যুত্থানচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করতেই বিশাল আয়তনের এজলাসবিশিষ্ট আদালতটি স্থাপন করে এরদোয়ান সরকার।