ইউক্রেনে নতুন প্রজন্মের লেজার অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের ড্রোন ধ্বংস করার জন্য নতুন প্রজন্মের শক্তিশালী লেজার অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বুধবার মস্কোর পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়। ইউক্রেনে পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহের ঢল নেমেছে। এ জন্য রাশিয়া তাদের কিছু গোপন অস্ত্র ইউক্রেনে মোতায়েন করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেশ কিছু নতুন অস্ত্র উন্মোচন করেন। এর মধ্যে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, পানির নিচের পারমাণবিক ড্রোন, একটি সুপারসনিক অস্ত্র ও একটি লেজার অস্ত্রও ছিল।

ইউক্রেনে লেজার অস্ত্র ব্যবহারের কথা জানালেও মস্কোর এসব অস্ত্র সম্পর্কে জানা যায় সামান্যই। পুতিন ওই সময় একটি অস্ত্রের নাম বলেছিলেন পেরেসভেট। মধ্যযুগীয় যোদ্ধা আলেকজান্ডার পেরেসভেটের নামানুসারে এই অস্ত্রের নামকরণ করা হয়েছে। পেরেসভেট যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ও দেশটির সমরাস্ত্র উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা জুরি বোরিসোভ মস্কোতে এক সম্মেলনে লেজার অস্ত্র সম্পর্কে বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় পেরেসভেট মোতায়েন করা হয়েছে। আকাশে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে লক্ষবস্তুতে এ অস্ত্র আঘাত করতে পারে।

তিনি বলেন, তবে রাশিয়ার চেয়েও আরও শক্তিশালী অস্ত্র অন্যদের রয়েছে, যেগুলো ড্রোন ও অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করতে পারে। গত মঙ্গলবার এসব অস্ত্রের এক পরীক্ষা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এটি মাত্র পাঁচ মিনিটেই পাঁচ কিলোমিটার দূরের ড্রোন ধ্বংস করতে পারে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে রুশ উপপ্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মস্কো এসব অস্ত্র ইউক্রেনে ব্যবহার করছে কি–না। এ সময় তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। এই অস্ত্রের প্রথম প্রোটোটাইপ ইতিমধ্যে সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে।’ ইউক্রেনে ব্যবহৃত সেই অস্ত্রের নাম ‘জাদিরা’ বলেও জানান তিনি।

জাদিরা সম্পর্কে প্রকাশ্যে প্রায় কিছুই এখনো জানা যায়নি। নতুন প্রজন্মের এই লেজার অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো তথ্যই নেই বলা চলে। তবে ২০১৭ সালে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক করপোরেশন রোসাতোম এই অস্ত্র তৈরিতে সাহায্য করেছে।

রয়টার্স বলছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিন ইউক্রেনে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়ার পরই সোভিয়েত পরবর্তী রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রচলিত অস্ত্রের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যদিও পুতিন বলছেন, তার নির্দেশে ইউক্রেন বিশেষ সামরিক অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে এবং যেই লক্ষ্য নিয়ে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে এই অভিযান পরিচালনা করছে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবে রাশিয়া।