ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে রুশ সেনার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে প্রথম কোনো রুশ সেনাকে সাজার মুখোমুখি হতে হলো। ভাদিম শিশিমারিন (২১) নামের ওই সেনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কিয়েভের একটি আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে বেসামরিক এক ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। স্থানীয় সময় আজ সোমবার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। এর কয়েক দিন পর ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় চুপাখিভবকা গ্রামে ওলেকসান্দ্র শেলিপোভ (৬২) নামের এক বাসিন্দাকে শিশিমারিন গুলি করে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
কিয়েভের আদালতে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন ভাদিম শিশিমারিন। তবে গুলি করার জন্য তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন। এমনকি শেলিপোভের বিধবা স্ত্রীর কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন রাশিয়ার এই সেনা।
হামলা শুরুর পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১১ হাজারের বেশি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে ইউক্রেন। অনেক যুদ্ধাপরাধের ঘটনা তদন্ত করে দেখছে ইউক্রেন সরকার। রাশিয়া অবশ্য বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলার দাবি প্রথম থেকেই নাকচ করে আসছে।
এদিকে শিশিমারিনের সাজা ঘোষণার আগে আজই মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা রাশিয়ার এই সেনার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর নজর দেওয়া হবে।
আজ কিয়েভের আদালতে উপস্থিত ছিলেন নিহত ওলেকসান্দ্র শেলিপোভের স্ত্রী কাতেরিনা শেলিপোভা। এ সময় শিশিমারিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দয়া করে আমাকে বলেন, আপনারা (রুশ সেনা) কেন এখানে এসেছেন? আমাদের রক্ষা করতে? কার হাত থেকে রক্ষা করতে? আপনি কি আমার স্বামীর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন, যাঁকে আপনি হত্যা করেছেন?’
কাতেরিনা শেলিপোভার এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি শিশিমারিন। এর আগে ক্ষমা প্রার্থনা করে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, আপনি (শেলিপোভা) আমাকে ক্ষমা করবেন না।’ এ বিষয়ে বিবিসিকে শেলিপোভা বলেন, ‘আমি তাঁর (শিশিমারিন) এই অবস্থার জন্য দুঃখিত। তবে এ ধরনের একটি অপরাধের জন্য তাঁকে ক্ষমা করতে পারি না।’