ইউক্রেনের সীমান্তে দেড় লাখের বেশি রুশ সেনা

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা বা কূটনীতিক বহিষ্কারের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে জানিয়েছে ইইউ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর
ছবি: রয়টার্স

বেশ কিছুদিন ধরেই রাশিয়া ও ইউক্রেন সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, রাশিয়া তার প্রতিবেশী ইউক্রেন সীমান্তে এবং ইউক্রেন থেকে দখল করা ক্রিমিয়া উপদ্বীপে দেড় লাখের বেশি সেনা জড়ো করেছে। গতকাল সোমবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

বোরেল বলেন, ‘এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে ইউক্রেনের সীমান্তে। এই সংখ্যা দেড় লাখের বেশি হবে। নতুন করে সংঘাতের ঝুঁকির প্রমাণ এটি।’ বিশেষ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তবে ওই সূত্রের নাম তিনি প্রকাশ করেননি। ইউক্রেনের সীমান্তে সেনা জড়ো করলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা বা কূটনীতিক বহিষ্কারের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলেও জানান বোরেল।

ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও সাঁজোয়া যান, ট্যাংক, কামান জড়ো করার খবর সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করেন, ‘কারোরই যুদ্ধে জড়ানোর পরিকল্পনা নেই।’ কিন্তু প্রচ্ছন্ন হুমকি তিনি ঠিকই দিয়েছেন। বলেছেন, ‘রাশিয়া সব সময়ই বলে আসছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রুশ ভাষাভাষীদের ব্যাপারে তারা কখনোই উদাসীন থাকবে না।’ রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিষয়ে সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। সীমান্তে বাংকারও নির্মাণ করেছেন তাঁরা।

২০১৪ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে রাশিয়াপন্থী সরকারের পতন হয়। এরপর ইউক্রেনের রুশভাষী পূর্বাঞ্চল দোনেৎস্ক আর দক্ষিণাঞ্চল লুহানস্ক অঞ্চলে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেন এবং সেখানে ‘পিপলস রিপাবলিকস’ নামে আলাদা শাসনব্যবস্থা চালু করেন। এই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর লড়াই অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য রাশিয়া সেনা পাঠিয়েছে। তবে মস্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

ইউক্রেন সীমান্ত বিপুল সেনা মোতায়েনকে সাধারণ মহড়ার প্রস্তুতির অংশ বলে মস্কোর কর্মকর্তারা দাবি করলেও আপাতদৃষ্টে এটা মস্কোর আরেকটি যুদ্ধের প্রস্তুতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সামরিক তৎপরতায় পশ্চিমা দেশগুলো ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে পারে, এমন আশঙ্কায় কৃষ্ণসাগরে রণতরি পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে।