ইউরোপে তীব্র দাবদাহ

প্রচণ্ড গরমে জার্মানির হ্যানোভার শহরের একটি হ্রদে মানুষের ভিড়। ছবি: সরাফ আহমেদ
প্রচণ্ড গরমে জার্মানির হ্যানোভার শহরের একটি হ্রদে মানুষের ভিড়। ছবি: সরাফ আহমেদ

তীব্র দাবদাহে মধ্য ইউরোপ থেকে দক্ষিণ ইউরোপের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গরমের প্রকোপে ইতিমধ্যে কয়েকজন মারা গেছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে অব্যাহত এই গরমের প্রকোপ আগামী সপ্তাহ থেকে কিছুটা কমবে বলে আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন। আবহাওয়াবিদেরা আরও বলছেন, উত্তর আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির উত্তপ্ত বায়ুপ্রবাহের প্রভাবেই ইউরোপের তাপমাত্রা বেড়েছে।

মধ্য ইউরোপের জার্মানি, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রে এবং দক্ষিণ ইউরোপের স্পেন, পর্তুগাল, ইতালিতে তাপমাত্রা সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়া পঞ্জিকায় ২১ জুন ইউরোপে গ্রীষ্মকাল শুরুর পর থেকেই তাপমাত্রার পারদ ক্রমশই বাড়ছে। সাধারণত এই সময় ইউরোপে গরম পড়লেও এ বছরে তাপমাত্রা পুরোনো সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জার্মানিতে ১৪০ বছরের পরিসংখ্যানে এবার জুন মাস ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম মাস।

গতকাল শনিবার ফ্রান্সের মন্টপিলিয়ারের কাছে গ্যালার্গেস-লে-মন্ট্যুক্সে ৪৫.৯ ডিগ্রি এবং দেশটির দক্ষিণে ভিল্লিভিলেতে ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জার্মানির বিভিন্ন শহরেও শনিবার তাপমাত্রার পরিমাণ ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার হল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পর্তুগাল, স্পেনের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও ফ্রান্সের কিছু শহরে শনিবার বাজার এলাকাগুলো জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে। একই ঘটনা ইউরোপের অনেক শহরে ঘটেছে। ফ্রান্সে ইতিমধ্যে প্রচণ্ড গরমের কারণে দুজন এবং জার্মানিতে তিনজন ও স্পেনে দুজনের মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য ২০০৩ সালে প্রচণ্ড গরমের কারণে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল।

প্রচণ্ড গরমে ফ্রান্সে ৪ হাজার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এভাবে এত স্কুল বন্ধ ঘোষণার জন্য অনেকে ফ্রান্স সরকারের সমালোচনা করেছে। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড ফিলিপ বলেছেন, ‘২০০৩ সালে প্রচণ্ড তাপমাত্রার কারণে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল, আমরা তাই কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাই না।’

শনিবার স্পেনের কাতালানিয়া প্রদেশের টারাগোনায় শত শত অগ্নিনির্বাপক কর্মী ৬৫ হাজার হেক্টর পরিমাণ জমির একটি বনাঞ্চলে আগুন নির্বাপণের জন্য চেষ্টা করেছে। নিরাপত্তার কারণে আগুন লাগা বনাঞ্চলের কাছেই অবস্থানরত ব্রিটিশ ও জার্মান পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইতালির রোম ও ফ্লোরেন্সসহ ছয়টি শহরে প্রচণ্ড গরমের কারণে স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের পানি সরবরাহ করেছে।

জার্মানির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী সোমবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে।