ইতালিতে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ‘গ্রিন পাস’

এক শ্রমিক তার ডিজিটাল গ্রিন পাস দেখাচ্ছেন।
ছবি: রয়টার্স

ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে সব শ্রমিকের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে করোনাভাইরাসের ‘গ্রিন পাস’ চালু করতে যাচ্ছে ইতালি। এই পাস দেখাতে না পারলে কাজের সুযোগ পাবেন না শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার ইতালির মন্ত্রিসভা এই বিষয়টি অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গ্রিন পাস তাঁদেরই দেওয়া হবে, যাঁরা করোনার টিকা নিয়েছেন অথবা করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ ফল এসেছে অথবা সম্প্রতি করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি ইতালি। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবচেয়ে বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার। এর মধ্যেই সবশেষ গ্রিন পাস চালুর সিদ্ধান্ত নিল ইতালির সরকার।

গ্রিন পাস বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর মন্ত্রীরা সাংবাদিকেরা বলেছেন, কোনো শ্রমিক যদি বৈধ স্বাস্থ্য সনদ দেখাতে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি কাজে যোগ দিতে পারবে না। তবে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। কেউ যদি নতুন নিময় না মেনে কাজে যান, তাহলে তাঁকে ৬০০ থেকে ১৫০০ ইউরো জরিমানা গুণতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ সহজ করতে দেশগুলোর সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা নিতে নির্দেশ দিলেও সব কর্মীদের জন্য ‘গ্রিন পাস’ বাধ্যতামূলক করেনি। এই অবস্থায় মহাদেশটির প্রথম দেশ হিসেবে ইতালি গ্রিন পাস কর্মসূচির অনুমোদন দিল।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে চাকরি পেতে ভোগান্তির জন্য ইতালিতে বড় ধরনের কয়েকটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এমপ্লয়ারস ফেডারেশনসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ওই বিক্ষোভকে সমর্থন করেছে।

গ্রিন পাস চালুকে এমপ্লয়ারস ফেডারেশন স্বাগত জানালেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যেসব শ্রমিক টিকা নিতে চাইবে না তাদের জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে জোটটি।

ইউরোপে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৬ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে প্রায় ৭৪ শতাংশ মানুষ করোনার প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন, পূর্ণ ডোজ টিকা পেয়েছেন মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ।

এদিকে, করোনার টিকা না নেওয়ায় প্রায় ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে বরখাস্ত করেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। দেশটির সব স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার একদিন পর বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান এ তথ্য জানান।