করোনা রোধে ম্যার্কেলের জরুরি বৈঠকের ডাক

আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ফাইল ছবি

সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে জার্মানিতে ক্রমান্বয়ে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সঙ্কট মোকাবিলায় সমন্বিত নীতি তৈরির লক্ষ্যে শীর্ষ বৈঠকের ডাক দিয়েছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে জার্মানির ১৬ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আজ মঙ্গলবার জরুরি এই বৈঠকের কথা জানিয়েছেন। এই শীর্ষ বৈঠকের কথা ঘোষণা দেওয়ার আগে গতকাল সোমবার জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস স্পান ও রাজ্যগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন চ্যান্সেলর ম্যার্কেল। জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান সাইবার্ট জানিয়েছেন, জুন মাসের পর থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়ছিল। গ্রীষ্মের ছুটি শেষে তার গতি আরও বেড়েছে। এই বৃদ্ধি আতঙ্কজনক হওয়ার আগেই সাবধানতার কথা তিনি জানিয়েছেন। ইউরোপের প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কারণে সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে তাঁর মত।

মধ্য ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশেই নতুন সংক্রমণের হার আবারও সর্বোচ্চ পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। ফ্রান্সে প্রতিদিন ১০ হাজার, হল্যান্ডে প্রতিদিন ২ হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। উল্লেখ্য এই সব দেশের সঙ্গে জার্মানির সীমান্ত রয়েছে।
জার্মানির জাইট পত্রিকাটি জানিয়েছে, গত সাত দিনে জার্মানিতে ১২ হাজার ২৬৯ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। শুধু গত শুক্রবার সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ২১৯ জন। গত এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ প্রতিদিন ৬ হাজার মানুষের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার রেকর্ড ছিল। পরবর্তী সময়ে মে ও জুন মাসে সংক্রমণের হার ৫০০-এর নিচে পৌঁছেছিল।

জার্মানির ব্যাভেরিয়া রাজ্যের রাজধানী মিউনিখ শহরে হঠাৎ করে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস সোয়েডার রাজ্যটিতে নতুন করে সংক্রমণ রোধে রাস্তাঘাটে মাস্ক পরাসহ, জমায়েত ও অনুষ্ঠানাদির বিষয়ে নতুন বিধি জারি করেছেন। মিউনিখের বিখ্যাত অক্টোবর উৎসবসহ আসন্ন ডিসেম্বরের ক্রিসমাস বাজার বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

জার্মানির সংক্রমণ রোগ বিষয়ের গবেষণাকেন্দ্র রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, শুধু গতকাল সোমবার জার্মানিতে ১ হাজার ৮২১ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এযাবৎ ২ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৮ জন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৩৯৬ ব্যক্তির।

জার্মানিতে করোনাভাইরাস রোধে নানা বিধিনিষেধ শিথিল হলেও অফিস, দোকানপাট, বাস, ট্রেনে মাস্ক পরিধান আবশ্যক। স্কুল খুললেও শ্রেণিকক্ষ ছাড়া স্কুলের সীমানায় মাস্ক পরার বিধি চালু রয়েছে। রেস্টুরেন্টগুলো চালু হলেও দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হচ্ছে। সুইমিং পুলগুলোতে সীমিত সংখ্যায় সাঁতার কাটার সুযোগ রয়েছে, জার্মান ফুটবল লিগের খেলাগুলোতে এত দিন দর্শকবিহীন খেলা চললেও, আবার সীমিতসংখ্যক দর্শকের ঢোকার অনুমোদন দেওয়ার কথা হচ্ছে।