করোনার উৎস সন্ধানে ‘শেষ সুযোগ’ ডব্লিউএইচওর

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি ভবন
রয়টার্সের ফাইল ছবি

করোনার উৎস সন্ধানে নতুন একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, কীভাবে করোনার সূত্রপাত হলো, তা খুঁজে বের করতেই এ টাস্কফোর্স। বলা হচ্ছে, এ টাস্কফোর্সই শেষ সুযোগ করোনার উৎস সন্ধানের জন্য। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির।

২০১৯ সালের শেষের দিকে এসে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। পরে তা মহামারির আকার ধারণ করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভাইরাসটির উৎস কী ছিল, তার জবাব করোনা শনাক্তের দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মেলেনি।

ডব্লিউএইচওর নতুন টাস্কফোর্সটি গঠন করা হয়েছে ২৬ জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে। নাম রাখা হয়েছে সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন দ্য অরিজিনস অব নভেল প্যাথোজেনস (সাগো)। করোনা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসেছে, নাকি উহানের কোনো পরীক্ষাগারের দুর্ঘটনা থেকে ছড়িয়েছে, তা যাচাই করে দেখবে নতুন এ দল; যদিও পরীক্ষাগার থেকে করোনা ছড়ানোর বিষয়টি প্রথম থেকেই নাকচ করে এসেছে চীন।

করোনাভাইরাস প্রতীকী ছবি

এর আগেও অবশ্য করোনার উৎস সন্ধানে একটি দল গঠন করেছিল ডব্লিউএইচও। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই চীনে গিয়ে তদন্ত চালায় দলটি। করোনা বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে এসেছে—এমন ধারণার ওপরই শেষ পর্যন্ত জোর দেয় তারা। তবে এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানান সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। তাঁর দাবি ছিল, পর্যাপ্ত তথ্য ও চীনের স্বচ্ছতার অভাবে তদন্তকাজে বিঘ্ন ঘটেছে।

ডব্লিউএইচওর এবারের টাস্কফোর্সে অবশ্য সবাই নতুন নয়। চীনে তদন্ত করতে যাওয়া আগের দল থেকেও ছয়জন রয়েছেন এতে। সাগোর সদস্যরা করোনা ছাড়াও ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে—এমন জীবাণু নিয়েও তদন্ত করবেন। ডব্লিউএইচওর প্রধান বলেন, আগামী দিনে নতুন কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নতুন জীবাণুগুলো কোথা থেকে আসছে, তা বোঝাপড়া করা দরকার।

নতুন টাস্কফোর্সের বিষয়ে ডব্লিউএইচওর জরুরিবিষয়ক পরিচালক মাইকেল রেয়ান বলেন, করোনার উৎস সন্ধানে সাগোর তদন্তই হবে শেষ সুযোগ। আর জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, সাগোর তদন্তকে ‘রাজনৈতিকীকরণ’ করা যাবে না।

এদিকে ডব্লিউএইচও এমন এক সময় টাস্কফোর্স গঠন করল, যখন উহানের লাখো মানুষের রক্তের নমুনা পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে চীন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের শেষ ভাগে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে সংগ্রহ করা দুই লাখের বেশি রক্তের নমুনা নতুন করে পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে চীন। এসব নমুনা উহান ব্লাড সেন্টারে সংরক্ষণ করা রয়েছে। এ পরীক্ষা করোনার উৎস এবং কখন ও কীভাবে এটি মানবদেহে ছড়িয়েছে, সেসব নিয়ে আরও সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ তথ্য জানাতে পারবে।