কান্না পেলে যাবেন যে ঘরে

মাদ্রিদের কান্নাঘরে রয়েছে একটি বাথটাবওছবি: রয়টার্স

ধরুন, আপনার সামনে একটি ঘর। সেখানে নোটিশে লেখা, ‘প্রবেশ করো এবং কাঁদো’। মিষ্টি গোলাপি রঙের আরেকটি নোটিশ বোর্ডে লেখা, ‘আমি উদ্বেগের মধ্যে আছি’। ঘরের এক কোণে একটি ফোনও রাখা। সেখানে হতাশা কাটাতে যাঁদের সঙ্গে কথা বলা যাবে, তাঁদের ফোন নম্বর দেওয়া। তাঁদের মধ্যে একজন মনোবিদও রয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

মানসিক স্বাস্থ্যের সচেতনতা–বিষয়ক বিভিন্ন স্লোগান লেখা রয়েছে কান্নাঘরে
ছবি: রয়টার্স

ভাবছেন কোথায় এমন ঘর? স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে গেলে পাওয়া যাবে এমন কান্নাঘর। সেন্ট্রাল মাদ্রিদের একটি ভবনে এমন প্রকল্পের সঙ্গে দেশটির যে কেউ যুক্ত হতে পারেন। এই প্রকল্পের লক্ষ্য মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন।

মাদ্রিদে থাকেন সুইডিশ শিক্ষার্থী জন নেলসম। তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে এ ধরনের কান্নাঘর তৈরির পরিকল্পনা খুবই অভিনব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো স্পেনেও কান্নাকে একধরনের দুর্বলতা বা অস্বস্তিকর ব্যাপার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কান্নাঘরে ফরাসি ভাষায় মানসিক স্বাস্থ্যের সচেতনতা–বিষয়ক বিভিন্ন বার্তা রয়েছে
ছবি: রয়টার্স

এক সপ্তাহ আগে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য ১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার বরাদ্দ দেন। এর মধ্যে আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু করা হয়।

কান্নাঘরে এক ব্যক্তি
ছবি: রয়টার্স

প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষে কান্নাঘর প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তিনি বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি কোনো সামাজিক বাধার বিষয় নয়; এটা জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সংকট। আমাদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এই ইস্যু জনগণের সামনে আনতে হবে।’

২০১৯ সালে স্পেনে ৩ হাজার ৬৭১ জন আত্মহত্যা করেন। দেশটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া আত্মহত্যা হচ্ছে মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ। সরকারি তথ্য অনুসারে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে ১ জনের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। এ ছাড়া ৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ উদ্বেগ ও মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন।